• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

ঈদের ছুটিতে পীরগঞ্জে বিয়ের হিড়িক, পাঁচ দিনে ৫ শতাধিক!

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২১  

করোনা মহামারির মধ্যে সামাজিক অনুষ্ঠানে বন্ধের সরকারি নির্দেশনা থাকলেও পীরগঞ্জের মানুষদের আর ত্বর সইছে না। রীতিমতো বিয়ের হিড়িক পড়ে গেছে। ঈদের আগের দিন থেকে শনিবার (২৪ জুলাই) পর্যন্ত মাত্র পাঁচ দিনেই উপজেলায় পাঁচ শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে!

উপজেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার ও হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রারের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ঈদুল আজহার ছুটিতে অনেকে কর্মস্থল থেকে বাড়ি এসেছেন। তাঁদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহখানেক শিথিল করে সরকার। আর এই সুযোগে মানুষ তড়িঘড়ি করে বিয়ের আয়োজন করতে শুরু করে। গত পাঁচ দিনে পাঁচ শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

বিয়েবাড়ির সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবারই পীরগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ধনশালা গ্রামে ১ মেয়ে ও ২ ছেলের বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে ধনশালা গ্রামের মতিয়ার রহমানের কন্যা মাহমুদা খাতুন তিমির (২০) বিয়ে হয়েছে পীরগঞ্জের মিঠিপুর ইউনিয়নে, একই গ্রামের খাজা সরকারের ছেলে পবন সরকার (২৫) উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নে এবং মৃত আকতার মণ্ডলের ছেলে জীবন মণ্ডল (২৫) উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নে বিয়ে করেছেন।

এই মহামারির মধ্যেও কেন বিয়ে করার এত তাড়া– এ প্রশ্নে ধনশালা গ্রামের সদ্য বিবাহিত পবন সরকার বলেন, ‘এই করোনায় আমরা সবাই ঘরবন্দী হয়ে আছি। কিন্তু বয়স তো থেমে নেই। তাই পরিবারের সিদ্ধান্তে আমাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হলো। বয়স বেশি হলে সম্ভাব্য সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়া অসম্ভব হবে, এমন চিন্তা মাথায় রেখেই পরিবার আমাকে বিয়ে করিয়েছে।’

গত কয়েক দিনে বিয়ের পরিসংখ্যানটা যে অস্বাভাবিক সেটি স্বীকার করছেন রায়পুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমানও। তিনি বলেন, এবারে বিয়ে একটু বেশি হচ্ছে। আমার রায়পুর ইউনিয়নে প্রতিদিনই তিন থেকে চারটি বিয়ে হচ্ছে।

উপজেলার হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রার জীবন কুমার অধিকারী বলেন, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৩৩১টি গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০টি গ্রামে হিন্দুধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষের বসবাস। এবারে ঈদুল আজহা উপলক্ষে লকডাউন শিথিলের মধ্যে বেশ কিছু বিয়ে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আগে হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রি হতো না। এখন বিয়ে রেজিস্ট্রি হওয়ায় বিয়ের পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া ভাদ্র মাসে হিন্দুদের বিয়ে হয় না। তাই চলতি শ্রাবণ মাসেই বিয়ে বেশি হচ্ছে।

উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আমার ইউনিয়নে ২৯টি গ্রাম রয়েছে। গত শুক্রবারেই কৃষ্ণপুর ও জামালপুর গ্রামে নয়টি বিয়ের খবর পেয়েছি। গত ৭২ ঘণ্টায় ৬০টিরও বেশি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, বিয়ে করার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে! সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিক আচার, অনুষ্ঠানগুলো সীমিত পরিসরে পালন করতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে বিয়ের অনুষ্ঠান ঘটা করে পালন করা যাবে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –