• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

আলুর বাম্পার ফলন: দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২২  

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর আলু চাষ বাড়ছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলাতেও সরবরাহ করা হয় এখানকার আলু। কিন্তু এবার আলুর দাম না পেয়ে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। গত বছর চাষিরা এই সময় প্রতি কেজি আলু মাঠেই বিক্রি করেছিলেন ২০-২৫ টাকা দরে। আর এবার প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫-৬ টাকা দরে। যার উৎপাদন খরচই হচ্ছে কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা দরে। তারপরও মাঠে ক্রেতা নেই। গত বছর অধিক দামে আলু বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় এবারও লাভের আশায় আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন কৃষক। কিন্তু আলুর বাজারে ধস নামায় হতাশ হচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আলুর ফলনও অনেক ভাল হয়েছে। যদিও আলু চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমি।

চাষিরা জানান, এক বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন করতে সাধারণত কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়। গড়ে এক বিঘা জমিতে ৭৫ মণ আলু উৎপাদন হয়। এই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১০-১২ টাকা। সাধারণত মাটিতে একবার আলু রোপণ করলে একবার ফলন পাওয়া গেলেও এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। চাষিরা এবার দুই বার আলু রোপণ করে ফলন পাচ্ছেন মাত্র একবার। আগাম আলু রোপণের কয়েকদিন পড়ে বর্ষার শেষের বৃষ্টিতে রোপণকৃত আলু মাঠেই পচে যায়। লাভের আশায় সেই জমিতে ফের আলু রোপণ করেন চাষিরা। সে কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে চাষিদের।

পাকেরহাট এলাকার আলু চাষি আব্দুল মজিদ বলেন, আমি এবার ৩ একর জমিতে আলু চাষ করেছি। গতবছর আলুর ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছিলাম, কিন্তু এবারে আলু ৬ টাকা দরে বিক্রি করতে হলো, তাও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এবারে আমি আলু চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

ওই এলাকার আরেক চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এবারে কীটনাশকের দাম অনেক বেশি ছিল। আর এবারে আলুর দাম কম। এবার আমাদের অনেক লোকসান হবে। এক মণ আলু বিক্রি করে একটা কামলা খরচ দিতে হয়। তাহলে হিসাব করেন আমাদের অবস্থানটা কোথায়। আমরা এবার আলু চাষ করে লোকসানে পরে গেলাম।

ভেড়ভেড়ী এলাকার আলু চাষি মাজেদুর বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল এবং কম ফলনেও ভালো লাভ হয়। এবার বেশি ফলনেও লোকসান হচ্ছে। এবার লাভ তো দূরের কথা আসলও তুলতে পারছি না। কম দামে আলু বিক্রি করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এরপরও নগদ টাকার ক্রেতা নেই। এমতাবস্থায় সরকার যদি আলুচাষিদের দিকে না তাকায়, তাহলে আমরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, কৃষকরা এখন আলু তুলছে। এবার আলুর ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। তবে দাম কম পাচ্ছেন কৃষক। খুচরা বাজারে আলুর যে দাম পাইকারি বাজারে তার থেকেও অনেক কম।

কৃষি অধিদপ্তর মনে করছে, এই আলু যদি আরও ১০-১৫ দিন আগে তোলা হতো, তাহলে কৃষকরা দাম মোটামুটি ভালো পেতেন। তবে সামনের দিকে দাম কিছুটা বাড়লে চাষিদের লোকসানে পড়তে হবে না। চাষিদের যে কোনো পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে রয়েছে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –