• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ মে ২০২২  

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। শুক্রবার সৈকতের প্রায় পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে দুই লাখ পর্যটক উৎসব-উল্লাসে মেতে উঠেন।
এছাড়া দরিয়ানগর, ইনানী, পাটোয়ারটেক, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কেও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সরেজমিন বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুক্রবার অন্তত দুই লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করেছেন। ঈদ পরবর্তী বুধ ও বৃহস্পতিবারও গড়ে প্রায় দুই লাখ করে পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেছেন। সব মিলিয়ে ঈদের দিন মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৬ লাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। আর এতে ৪ দিনে কক্সবাজারে পর্যটন খাতে অন্তত ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে।

এদিকে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের অগ্রিম বুকিং রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আরও অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন। ঈদকে কেন্দ্র করে সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১১ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করবেন। এতে পর্যটন খাতে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, করোনাভাইরাসের ভয়াবহ থাবা এবং রমজান পরবর্তী পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দীর্ঘশ্বাসের পর এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে গড়ে প্রতিদিন দেড় লাখ করে পর্যটকের আগমন ঘটেছে। গত চার দিনে প্রায় ৬ লাখ পর্যটক এসেছেন। আরও কয়েকদিন পর্যটক আসবেন। তাই বলা যায়-এবার ঈদকে কেন্দ্র করে ১০ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করবেন। এতে পর্যটন খাতে ১ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা হবে বলে জানান তিনি। 

একই তথ্য উল্লেখ করে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, শুক্রবার অন্তত দুই লাখ পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। ঈদের ছুটিতে ৪ দিনে পাঁচ লাখের বেশি পর্যটক এসেছেন। আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত কক্সবাজারে একইভাবে পর্যটক আসবেন। বর্তমানে কক্সবাজারের ছয় শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে শতভাগ বুকিং হয়ে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার ঈদের ছুটি ও ঈদ ঘিরে কক্সবাজারে অন্তত ১০ লাখ পর্যটক আসবেন। আমাদের হিসাবে ১০ লাখ পর্যটকের ভ্রমণে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব খাত মিলে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে এ বছর ঈদে কক্সবাজারে পর্যটক বেশি এসেছেন এবং আরও কয়েকদিন পর্যটক আসবেন। এতে পর্যটক আগমনের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঈদের দিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আনুমানিক ৬ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন। এতে সংশ্লিষ্ট সব খাত যেমন একজন পর্যটক ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসা-যাওয়া, হোটেলে একদিন থাকা-খাওয়াসহ সব মিলিয়ে জনপ্রতি গড়ে ১০ হাজার টাকা করে খরচ হয়। এ হিসাবে ৬০০ কোটি টাকার মতো পর্যটন খাতে ব্যবসা হয়েছে। ১০ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করলে হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ১০ লাখ পর্যটকের কাছ থেকে আনুমানিক হোটেল খাতে ৪০০ কোটি টাকা, পরিবহণ খাতে ৩০০ কোটি টাকা, খাবার হোটেলে বাবদ ২০০ কোটি টাকা, শুঁটকি বাজারসহ অন্যান্য খাতে আরও ১০০ কোটিসহ মোট ১ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হবে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান এবং টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান বলেন, এবার ঈদে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আরও কয়েকটা দিন কক্সবাজারে একইভাবে পর্যটক আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ জেলার সব পর্যটন স্পটগুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত পর্যটকদের হয়রানি অথবা কোনো অঘটন ঘটেনি।

জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, ঈদের দিন থেকে কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো বিশৃঙ্খলা ও কোনো অঘটন যাতে না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের সব বিভাগের সমন্বয়ে ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ৭ দিন জেলাজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজন পড়লে সময় আরও বৃদ্ধি করা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। যাতে কক্ষ ভাড়া অতিরিক্ত না নেওয়া হয় সে ব্যাপারে তৎপর রয়েছেন জেলা প্রশাসনের চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –