• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

সৈয়দপুরে বেগুনি ধান চাষে শফিকুলের চমক

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২ জুন ২০২৩  

 
দিগন্তজোড়া সবুজ ধানখেত। মাঝখানে টুকরো জমিতে সোনালি আভা ছড়ানো বেগুনি রঙের ধান। এই বেগুনি রঙ প্রকৃতিতে এনেছে নতুন মাত্রা। যা দেখতে মানুষের ভিড় লেগে থাকে সারাক্ষণ। ‘ব্ল্যাক রাইস’ বা ‘কালো ধান’ চাষ করে সাড়া ফেলার পর এবার বেগুনি পাতার ধান চাষ করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক শফিকুল ইসলাম। উপজেলার নিয়ামতপুর দেওয়ানীপাড়া গ্রামের মাঠে এমন ধানের আবাদ নজর কেড়েছে সবার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খেত ভরে উঠেছে বেগুনি রঙের পাতায়। প্রতিটি গাছের ডগায় ঝুলছে বেগুনি পাতার ধানের শীষ। এই ধান দেখতে ভিড় করছেন এলাকার মানুষ। বেগুনি রঙের পাতার ধান নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের কমতি নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ ধানের নাম ‘পার্পল রাইস’। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের গায়ের রং সোনালি ও চালের রং বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫ থেকে ১৫৫ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় ফলনও বেশ ভালো। একর প্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।

কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, গতবার কালো ধান চাষ করেছি, এবার বেগুনি ধান। এ ধান এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই ধান দেখতে আসতেছে। এই বেগুনি ধান নেত্রকোণার আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে এনেছি। সেখান থেকে দুইটি ধানের শীষ নিয়ে এসে গত বছর ২০টি চারা থেকে প্রায় ২ কেজির মতো ধান হয়। এবার সেই ধান বীজ হিসেবে রোপণ করি। এই ধানে তেমন কোনো রোগবালাই নেই। এটা বিআর ২৮-এর চেয়ে ফলন ভালো ও আগাম হয়। আমি এবার ২৫ শতক জমিতে আবাদ করেছি। আশা করছি অনেক ভালো ফলন হবে।

দেওয়ানীপাড়া এলাকার কৃষক মাজেদুল বলেন, এটা বেগুনি ধানের জাত, এর ফলন নাকি অনেক ভালো। এটা দেখার জন্য এসেছি। দেখে যা বুঝলাম ফলন অনেক ভালো। আগামীতে আমিও আবাদ করবো। এই ধানের চাল নাকি ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।

একই ইউনিয়নের কলাগাছ গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন বলেন, নীলফামারী জেলার মধ্যে প্রথম এই ধান দেখার জন্য আসছি। জানতে  পেরেছি এই ধানে তেমন কোনো পোকামাকড় আক্রমণ করে না। এছাড়া সারও কম দিতে হয়। এ ধানের ফলন মোটামুটি অন্যান্য ধানের থেকে ভালো। তাই চিন্তাভাবনা করছি, আগামীতে আমিও এই ধান চাষ করবো।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহিনা বেগম বলেন, কৃষক শফিকুল এর আগেও কালো ধান চাষ করে সফল হয়েছেন। এবার তিনি বেগুনি ধান চাষ করে আরও বেশি সাড়া ফেলেছেন। আমরা উনাকে সব সময় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –