• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

কমানো হচ্ছে পণ্যের আমদানি শুল্ক

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩  

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেছেন, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতিশীলতা আনাসহ নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে টেকসই অর্থনীতি বিনির্মাণে বাংলাদেশ কাস্টমস অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ধরে রাখার জন্য পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে।

 পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে জ্ঞান চর্চা এবং পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ কাস্টমস দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে 'আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস' উপলক্ষে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। 

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এনবিআর কম খরচে রাজস্ব আহরণ করছে বলে মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি ১০০ টাকা রাজস্ব আহরণ করতে এনবিআরের খরচ হয় ২১ পয়সা। অর্থাৎ রাজস্ব আদায়ের বিপরীতে খরচ ০ দশমিক ২১ শতাংশ। ভারতের শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ, জার্মানির ১ শতাংশ, জাপানের শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ১ শতাংশ খরচ হয়। সে হিসেবে আমরা অনেক কম খরচে রাজস্ব আহরণ করে থাকি। তার মানে এই নয় আমাদের রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে প্রচেষ্টার কোনো কমতি আছে। আমরা কম সম্পদ ব্যবহার করে দক্ষতার সঙ্গে রাজস্ব আহরণ করি, এটাই আমাদের গর্ব। 

আবু হেনা বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাস্টমস এখন রাজস্ব আহরণ ছাড়াও ট্রেড ফেসিলিশন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে। চলতি অর্থ-বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রাজস্বের ৪৪ হাজার ৯৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা বাংলাদেশ কাস্টমস থেকে এসেছে। গত অর্থ-বছরের তুলনায় যার প্রবৃদ্ধির হার ৯.২৫ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যে মন্দাভাব চলছে তার প্রভাব আমাদের বাণিজ্যেও পড়েছে। এ সময় সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বেশকিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়েছি। তিনি জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাস্টমস থেকে রাজস্ব এসেছে ৪৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা। আগের অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় যার প্রবৃদ্ধির হার ৯.২৫ শতাংশ। আগের চেয়ে রাজস্ব আহরণ কিছুটা কমলেও বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি যেতে পারব বলে আশা করছি। 

তিনি আরও বলেন, শুল্কহার কমানো-বাড়ানো ট্যারিফ কমিশন বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ না। শুল্কহার কমানো-বাড়ানো এনবিআরের কাজ। যখন অন্য কোনো মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব আসে তখন তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে। আর এনবিআর যখন বিবেচনা করে তখন সার্বিক দিক বিবেচনা করে। শুধু শুল্কহার কমানো-বাড়ানোর ডলার সাশ্রয়ের সম্পর্ক নয়। এর সঙ্গে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় কিনা, চোরাচালানের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় কিনা এসব বিষয়গুলোও আমাদের দেখতে হয়। এসব বিবেচনায় যেসব পণ্যের শুল্কহার বাড়ানো দরকার সেগুলো আমরা বাড়াই, প্রয়োজনে আরও বাড়াব। অনেক জিনিস অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে, কিন্তু দেখা যাবে সেগুলো আরেকটি পণ্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৭ জন কর্মকর্তা ও তিন অংশীজনকে সার্টিফিকেট অব মেরিট সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। 

সম্মাননা পাওয়া এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তারা হলেন-এনবিআরের প্রথম সচিব ডক্টর নেয়ামুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ কাস্টমস, এক্সাইস ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম-কমিশনার রুহুল আমিন, মোছা. শাকিলা পারভীন, আবদুল রশীদ মিয়া, মংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার মহিবুর রহমান ভূঞা, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পায়েল পাশা ও এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব পারভেজ রেজা চৌধুরী। এছাড়া সম্মাননা পাওয়া বাকি কর্মকর্তারা হলেন বৃহৎ করদাতা ইউনিটের উপ-কমিশনার মিতুল বণিক, ঢাকা (পূর্ব) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ইফতেখার আলম ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার মোছা. আয়শা সিদ্দিকা, ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মিজ জেবুন্নেছা, এনবিআরের সহকারী প্রোগ্রামার কামরুন নাহার মায়া, ঢাকা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাতের রাজস্ব কর্মকর্তা বিপস্নব রায়, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা অনিমেষ মন্ডল, ফাহাদ চৌধুরী, মনিরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান খান। 

এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) অংশীজন হিসেবে অবদান রাখার জন্য সার্টিফিকেট অব মেরিট ও সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাইজেশনের (ডবিস্নউসিও) সদসভুক্ত ১৮৩টি দেশে একযোগে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাজেশন ২৬ জানুয়ারিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকে বাংলাদেশ দিবসটি উদযাপন করছে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –