• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে কাঁচা ছোলা

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

বর্তমানে ডায়াবেটিসে সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। অতিরিক্ত কাজের চাপ, স্ট্রেস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, অনিয়মিন জীবনযাত্রাই আমাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ। 
প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই এখন ডায়াবেটিস রোগে ভুগে থাকেন। তবে এটি কোনো মারাত্মক রোগ নয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে এবং নিয়মিত চিকিৎসায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এছাড়াও ব্যায়াম এবং নির্ধারিত ওষুধের পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট আপনাকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। 

আর তা হলো কাঁচা ছোলা। ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ছোলা। কাঁচা, সিদ্ধ বা তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে, খোসা ছাড়িয়ে, কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে একই সঙ্গে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিক গঠন হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায়। আর অ্যান্টিবায়োটিক যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক এর উপকারিতা সম্পর্কে- 

রক্ত চলাচল
এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন আধা কাপ ছোলা, শিম এবং মটর খায় তাদের পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। তাছাড়া ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় ।

ডায়াবেটিসে উপকারী
১০০ গ্রাম ছোলায় আছে রয়েছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভালো। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এর সবই শরীরের উপকারে আসে।

ক্যান্সার রোধে
কোরিয়ান গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে বেশি পরিমাণ ফলিক এসিড খাবারের সঙ্গে গ্রহণের মাধ্যমে নারীরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারেন। এছাড়া ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়। আর তা্ই নিয়মিত ছোলা খান এবং সুস্হ থাকুন।

কোলেস্টেরল
ছোলা শরীরের অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরো আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা দেখিয়েছেন যে খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ছোলাতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এর ডাল আঁশসমৃদ্ধ যা রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ৪০৬৯ মিলিগ্রাম ছোলা খায় হৃদরোগ থেকে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৯% কমে যায়।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। খাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়িই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে রক্তে চলে যায় না। বেশ সময় নেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভালো।

কাচা ছোলার অপকারিতা
কাঁচা ছোলার এমন কোনো অপকারিতা দিক নেই। তবে ছোলা ভেজে না খাওয়া ভালো। তাছাড়া ছোলা অত্যন্ত উপকারি দেহের জন্য। তাই সকলের ছোলা খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন।

ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে আমিষ মাংস বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের প্রয়োজন পরে না। ত্বকে আনে মসৃণতা। কাঁচা ছোলা ভীষণ উপকারী। তবে ছোলার ডালের তৈরি ভাজা-পোড়া খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। তাই হজমশক্তি বুঝে ছোলা হোক পরিবারের শক্তি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –