• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

কালের সাক্ষী কুড়িগ্রামের ‘চান্দামারী মসজিদ’ 

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০২০  

কালের সাক্ষ্য বহন করছে আনুমানিক ৪০০ বছর আগের চান্দামারী মসজিদ। মসজিদটি মোঘল আমলের শিল্পবৈশিষ্ট্য ও স্থাপত্যকলার সমন্বয়ে নির্মিত। স্থাপত্যের সুনিপুণ কারুকার্যে নির্মিত চান্দামারী জামে মসজিদটি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে চান্দামারী মণ্ডলপাড়া গ্রামে অবস্থিত।

স্থানীয়রা জানান, চান্দামারী মসজিদটি কবরস্থানসহ ৫২ শতক জায়গাজুড়ে অবস্থিত। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২০ ফুট। এর নির্মাণ কাজে ‘ভিসকাস’ নামে এক ধরনের আঠালো পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। মসজিদের সামনের দিকে পাঁচ ফুট উঁচু তিনটি বড় দরজা রয়েছে। ওপরে তিনটি বড় গম্বুজ আছে যার ব্যাসার্ধ প্রায় ৫.৫০ ফুট। গম্বুজ গুলোর গায়ে দৃষ্টিনন্দন নকশা করা আছে। চার কোণায় চারটি মাঝারি আকৃতির মিনার ও চারদিকে ঘিরে আছে আরও ষোলটি ছোট গম্বুজ। ভিতরের দিকে তিনটি মেহরাব আছে। মসজিদের গায়ে অনেকগুলো খিলান আছে। এ ছাড়া বায়ু চলাচলের জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে জানালা আছে।

মসজিদটি ঠিক কত বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল, তার সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থাপনাটির স্থাপত্যশৈলী প্রাচীন মোঘল আমলের স্থাপনার সঙ্গে মিল থাকায় ধারণা করা হয়, মসজিদটির নির্মাণকাল আনুমানিক ১৫৮৪-১৬৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে।

মসজিদের মুসল্লি বৃদ্ধ আব্দুল জলিল বলেন, আমি আমার বাবা ও দাদাকে এ মসজিদের বয়স সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উত্তরে তারা আমাকে জানিয়েছিলেন, তারাও না কি এ মসজিদের বয়স সম্পর্কে জানতে পারেননি।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, মসজিদটি কত সালে নির্মিত হয়েছিল, তা কেউ জানতে পারেননি। মসজিদের নির্মাণ সালও কোথাও উল্লেখ নেই। মসজিদটি তৈরি সম্পর্কে আমার বাবা, দাদারা ও তাদের দাদারাও না কি বলতে পারেননি। তবে ধারণা করা হয়, মসজিদটি মোঘল আমলে নির্মিত। মসজিদটিতে আমরা নিয়মিত নামাজ পড়ি।

মসজিদটির মুয়াজ্জিন আবু হানিফ বলেন, মসজিদটি কবে নির্মিত হয়েছিল, তা আমার বাপ ও দাদা কেউ বলতে পারেননি। তবে আনুমানিক মোঘল আমলে এটি নির্মিত হয়েছিল। আমি এর আগে তিন বছর এ মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলাম। আমার পরে একজন এসে ৩৫ বছর মুয়াজ্জিন ছিলেন। পুনরায় আমি ৫ বছর ধরে মুয়াজ্জিন হিসেবে আছি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজহার মন্ডল বলেন, প্রতি জুমার নামাজে মসজিদে পর্যাপ্ত মুসল্লির আগমন ঘটে। মসজিদটি সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত আবেদন করেও কোনো প্রকার সহায়তা পাইনি। মসজিদটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীরা আসেন। তিনি মসজিদটির স্মৃতি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি মসজিদটির স্মৃতি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম বলেন, চান্দামারী মসজিদটির স্মৃতি সংরক্ষণে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কোনো পদক্ষেপ নেই। যেহেতু মসজিদটি বর্ধিত করা হচ্ছে। মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ পড়ছেন। তিনি আরও বলেন, আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য কেউ আবেদন করেননি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –