• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

আজও স্বামী-সন্তানের সন্ধান পাননি উলিপুরের রাবেয়া 

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২১  

বাবার বাড়ি থেকে স্বামী-সন্তান নিয়ে দিনাজপুরে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই তার ৭ বছর বয়সী পুত্র সন্তান আলী হোসেনকে নিয়ে স্বামী খাজি মোল্লা নিখোঁজ হয়ে যান। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজও তাদের সন্ধান পাননি রাবেয়া বেগম। তিনি এখনও পথ চেয়ে থাকেন স্বামী-সন্তানের। 

রাবেয়া বেগম (৬৭) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভেলুর খামারের আব্দুল্লাহর মেয়ে। কয়েক বছর আগে একমাত্র মেয়ে রাশেদা বেগম বিয়ে করে শ্বশুর বাড়ি চলে যায়। 

এরপর ঠাঁই হয় একই গ্রামের জনৈক আবুল কালামের বাঁশঝাড়ে। এলাকাবাসীর সহায়তায় টিনের একটি ছোট ঘরে প্রায় ৮ বছর ধরে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার। বয়সের ভারে এখন তিনি ঠিকমত চলতেও পারেন না।
 
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার উলিপুর উপজেলায় শতভাগ বয়স্ক ভাতা নিশ্চিত করলেও রাবেয়া বেগমকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনতে চার হাজার টাকা দাবি করেন ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। গত এক বছর পূর্বে ভিক্ষা করে দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করলেও ভাতার কার্ড পাননি তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় রাবেয়া বেগমের সঙ্গে। আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, মোর ভাতা আর কখন হইবে। বাঁচি থাকতে যদি না হয়, তা হইলে মরার পর হইবে। মোর কাইও নাই বা। ২৫ বছর আগে মোর বাপক (সন্তান) নিয়ে মোর স্বামী পলাইছে। কত খুঁজিছং, তবুও মোর বাপক (সন্তান) পাং নাই। আল্লাহ্ যদি মোর ছাওয়াটাক ফিরি দিলে হয়।

অশ্রুসজল চোখে তিনি আরও বলেন, আগে শরীলত (শরীরে) বল (শক্তি) আছিল (ছিল) মানুষের বাড়িত যায়া খুঁজি খাছনু (খাইছিলাম)। এখন হাটপেরও পাংনা, খাবারও পাংনা। কাইও দয়া করি দিলে খাং, না দিলে অনাহারি (অভুক্ত) থাকং। মোর বাপ (সন্তান) থাকলে সে খাওয়াইল হয়। আজ তোমরা গুলা আনছেন, তোমরায় মোর বাপ হন। মুই দোয়া করং আল্লাহ্ তোমাক মেলা (দিন) বাঁচে থুউক। এভাবে বলতে বলতে অঝোড়ে কেঁদে ফেলেন রাবেয়া বেগম। এসময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করেন।

উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমান বলেন, ভাতা কার্ড করতে কোনো টাকা লাগে না। রাবেয়া বেগমের কাছ থেকে যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে সেটি নিতান্তই ঘৃণিত। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব তাকে ভাতা কার্ডের আওতায় আনা হবে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –