• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রাজিবপুরে হঠাৎ দেখা হলুদ গাছের ফুল 

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২১  

হলুদ বা হলদি গাছের সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। বাঙালিদের প্রতিদিনের রান্নায় নিত্যসঙ্গী হলুদ গুড়ো অথবা বাঁটা। সম্প্রতি হঠাৎ করেই একটি হলুদ চাষের জমির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা মিললো গাছে ফুটে থাকা ফুলের।

গাছের কাণ্ডের মাঝে ফুটে রয়েছে সাদা রঙের ফুলগুলো। হলুদ গাছের ফুলের রং সাধারণত হালকা হলুদাভ এবং সাদা এই দুই রঙের হয়ে থাকে। ফুলগুলো ৩০ থেকে ৪০ সেমি. লম্বা এবং ৮ থেকে ১২ সেমি. পর্যন্ত চওড়া হয়। পুষ্পবিন্যাসের দৈর্ঘ্যে ১০ থেকে ১৫ সেমি.। কাণ্ডের মাঝ থেকে ফুল বের হয়।পুষ্পমঞ্জরি যৌগিক এবং একটি বোঁটায় গুচ্ছ আকারে অনেকগুলো ফুল ফোটে। ফুলে মৃদু গন্ধ আছে তবে এতে কোন ফল বা বীজ হয় না।

হলুদের ইংরেজি নাম Turmeric এবং বৈজ্ঞানিক নাম Curcuma Longa এটি Zingiberaceac বা আদা পরিবারের অন্তর্গত একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ।

নানা গুণে গুণান্বিত হলুদকে বলা হয় মসলার রানি। হলুদের রং সোনালি এবং মনমোহিনী একটা ঘ্রাণও আছে এর। হাজার বছর ধরে পৃথিবীর মানুষ রান্নাসহ চিকিৎসার কাজে হলুদ ব্যবহার করে আসছে।

আমেরিকার কৃষি বিভাগের জাতীয় পুষ্টিগুণ তথ্যপঞ্জি মতে, ১ টেবিল চামচ হলুদগুঁড়ায় পাওয়া যায় ২৯ ক্যালরি, শূন্য দশমিক ৯১ গ্রাম প্রোটিন, শূন্য দশমিক ৩১ গ্রাম চর্বি, ৬ দশমিক ৩১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ দশমিক ১ গ্রাম আঁশ ও শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম গ্লুকোজ। এছাড়া পাওয়া যায় দৈনিক চাহিদার ২৬ শতাংশ ম্যাংগানিজ, ১৬ শতাংশ আয়রন, ৫ শতাংশ পটাশিয়াম, ৩ শতাংশ ভিটামিন সি এবং সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, কপার ও জিংক।

এতগুলো পুষ্টি উপাদানের উপকারিতার বিচারে হলুদকে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার অন্যতম উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিশ্বব্যাপি।

হলুদের পুষ্টিগুণ তো আছেই সেই সাথে আছে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা।

ক্যানসার প্রতিরোধে, আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তিলাভ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যকৃতের সুস্থতার জন্য সহায়ক, খাদ্য পরিপাক ও অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়ক, অ্যান্টিসেপ্টিক গুণাবলি, বার্ধক্যে আলঝেইমার ডিজিজ প্রতিরোধ, ব্রণ নিরাময়, শরীরের রঙ উজ্জ্বল, গলার স্বর ভাঙা, ফোঁড়া পাকা ও শুকানো,হাঁপানি রোগ, অতিরিক্ত পানির পিপাসা, ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগসহ আরও বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে হলুদের ব্যবহার করা যায়। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় হলুদের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

হলুদ গাছের আদি উৎস দক্ষিণ এশিয়া। হলুদ চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টির দরকার হয়, কন্দ (রাইজোম) রোপণের পর সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গাছ জন্মে। এটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ মাটির নিচে গাছের শেকড়গুলোকেই হলুদ বলা হয়। বছরে একবার হলুদ গাছের শিকড় তোলা হয়। পরের বছর পুরানো কন্দ থেকে নতুন গাছ গজায়।

হলুদ গাছ লম্বা আকৃতির। গাছের উচ্চতা জাত ভেদে ৬০-৯০ সে.মি এবং ১০৫-১২৫ সে.মি। প্রতি গাছে কুশির সংখ্যা ২ থেকে ৩টি। এর পাতার রঙ গাঢ় সবুজ এবং লম্বা আকৃতির।প্রতিটি গাছে পাতার সংখ্যা ৮ থেকে ১৫টি এবং পাতার দৈর্ঘ্য ৫৫-৬৫ সে.মি। প্রতি গাছে গড়ে হলুদের ওজন ২৫০-৮০০ গ্রাম।

রাজীবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি হলুদ ১ (ডিমলা), বারি হলুদ ২ (সিন্দুরী) ও বারি হলুদ ৩ নামের তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলো চাষ করলে স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন বেশি হয়।

চৈত্র মাসে হলুদ চাষের জন্য উত্তম সময়। সব ধরনের মাটিতেই হলুদ চাষ করা যায়। সাধারণ দো-আঁশ ও বেলে-দো-আঁশ মাটি হলুদ চাষের জন্য উত্তম। বাড়ির পাশের ছায়া যুক্ত এবং পরিত্যক্ত জমিতেও হলুদ চাষ করা যায় বলেও জানিয়েছেন তিনি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –