• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

পশুপালন ও সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নাইয়ারচরবাসীর

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২১  

কুড়িগ্রামের চিলমারীর চরাঞ্চলের মানুষ শাক-সবজি চাষ ও পশুপালন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। কুড়িগ্রামর চিলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের বন্যায় পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠের ফসল খেয়ে গেলেও সেই মাঠে এবং বসতবাড়িতে শাক-সবজি চাষ করে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছে চরাঞ্চলের মানুষ। এছাড়াও ভেড়া ও হাঁস-মুরগি পালন করে ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছে তারা। তাদের এই উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড দেখে উৎসাহিত হচ্ছে অনেকেই। বন্যায় তাদের ধানের বীজতলা, মাঠের ফসল, বাড়ির আশপাশের শাক-সবজি ও হাঁস-মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়। বন্যায় নষ্ট হয়ে যায় ঘরবাড়ি ও গরুর খাবার খড়ের গাদা। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। সংস্থার ট্রান্সজিশন ফান্ড (এএসডি) প্রকল্পের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ শুরু করে বসতভিটায় সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও ভেড়া পালন। এতেই পাল্টে যেতে থাকে তাদের জীবনমান। সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ পেয়ে তা কাজে লাগায় তারা।

চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের নাইয়ারচর এফডিএমসির সদস্য বুলবুলি বেগম। তিনি ফ্রেন্ডশিপের ট্রান্সজিশন ফান্ড (এএসডি) প্রকল্প থেকে ৩৬০০/- টাকা মূল্যের একটি ভেড়া পেয়েছেন। এখন তার চারটি ভেড়া। যার বাজারমূল্য ১৬ হাজার টাকা।

বুলবুলি বেগম বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে শাক-সবজি উৎপাদনের প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমার বসতবাড়িতে সবজি উৎপাদন করে এ বছর ৫ হাজার ১০০ টাকার সবজি বিক্রি করেছি। যা আমার সাংসারিক ব্যয়ভার বহনে সহায়ক হচ্ছে এবং আমি সবজি বিক্রির ৮ হাজার টাকা একটি ছাগল ক্রয় করেছি।

একই গ্রামের আইয়ুব আলী, সুমারী বেগম, বেহুলা খাতুন ও কছিরন বেগম বলেন, আগে হাট থেকে সার কিনে আনতাম, এখন আমরা কম্পোস্ট সার তৈরি করে ব্যবহার করি, ফেরোমন ফাঁদ দিয়ে পোকা মারছি, সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে বিভিন্ন অফিসে যোগাযোগ করছি এবং গ্রামে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমরা কাজ করছি।

এ বিষয়ে ফ্রেন্ডশিপ-এর ট্রান্সজিশন ফান্ড (এএসডি) প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ-এর সহায়তায় সদস্যদের আয় রোজগার নিয়মিতকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সম্পদবৃদ্ধি এবং সমাজে সুশাসন যেমন বাল্যবিবাহ রোধ, পারিবারিক নির্যাতন বন্ধ, জাতীয় সংসদ ও সংবিধান সম্পর্কে ধারণা, জিডি করার কৌশল ইত্যাদি শিক্ষামূলক আলোচনাসহ দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি, জনগোষ্ঠীর ভৌগলিক দুর্দশাগ্রস্থতা হ্রাসকরণ এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলার মোট ২৪টি চরে ৭২১ জন সদস্যকে উক্ত প্রকল্প সহায়তা প্রদান করেছি।

চিলমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশিদুল হক জানান, চিলমারী উপজেলায় ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশন ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ২১১টি পরিবারকে ভেড়া প্রদান করেছে এবং প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে; ফলে পরিবারগুলোর ভেড়া পালনের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেকটি ভেড়াকে টিকা এবং কৃমিনাশক বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চর এলাকা ভেড়া পালনের জন্য উপযুক্ত তাই ভেড়া পালনের মাধ্যমে চরাঞ্চলের মানুষ স্বাবলম্বী হবে বলে আমি আশা করছি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –