• মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৩০ ১৪৩১

  • || ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

বাবার হাতের মধ্যেই মারা গেল ছোট্ট আয়শা

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৪  


নৌকাডুবির পর ভেসে উঠেন আজিজুল হক। এ সময় দেখতে পান তার শিশুকন্যা আয়শা ভেসে আছে। এ সময় এক হাতে ১৩ মাসের আয়শা ও অপর হাতে স্ত্রীকে নিয়ে স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে তীরে পৌঁছান তিনি। কিন্তু এসে দেখেন স্ত্রী চায়না বেগম জীবিত থাকলেও মেয়ে আয়শা হাতেই মৃত অবস্থায় রয়েছে।

বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি তিস্তা নদীবেষ্টিত কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার দামারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন মাঝেরচর এলাকায়।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরায় গিয়ে দেখা যায়, আনিচা বেগম বাড়িতে বিলাপ করে বলেন, নৌকাডুবিতে তার সব শেষ হয়ে গেছে। ছেলে আনিছুর রহমান, পুত্রবধূ রুপালী বেগম, নাতনি আইরিন (৯) ও ইরা মনি (১০) ও একই এলাকার কয়জাল হকের শিশুসন্তান কুলসুম (আড়াই বছর) নিখোঁজ রয়েছেন।

আজিজুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নৌকা ডুবে যাওয়ার পর তিনি ভেসে উঠে দেখতে পান তার শিশু সন্তান আয়শা ভেসে আছে। এ সময় তিনি এক হাত দিয়ে তাকে ধরেন। একই সময় স্ত্রী চায়না বেগম ভেসে উঠলে তিনি তাকেও ধরেন। এরপর খুব কষ্ট করে স্রোতের বিপরীতে দুজনকে দুই হাতে ধরে নদীর তীরে আসেন। স্থানীয়দের সহায়তায় ওপরে উঠে দেখেন স্ত্রী বেঁচে থাকলেও তার হাতে থাকা শিশুসন্তানের দেহে প্রাণ নেই। তার অপর শিশু শামীম (৫) নিখোঁজ রয়েছে।

জানা গেছে, বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা খেয়াঘাট এলাকা থেকে জয়নাল আবেদীনের পরিবার ও তাদের আত্মীয়-স্বজন মিলে বুধবার সন্ধ্যায় ২৫ জন ব্যক্তি একটি নৌকায় উঠে। তারা নৌকায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পাওটানা গাবরের চর এলাকায় জয়নাল আবেদীনের মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ঈদপরবর্তী দাওয়াতে যাচ্ছিলেন।

নৌকাটি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কিছু সময় পর মাঝ নদীতে হঠাৎ দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে। এ সময় তিস্তার প্রবল স্রোতে নৌকাটি উলটে গিয়ে ডুবে যায়। নদীতে সাঁতার কেটে ৮ জন তীরে উঠতে পারলেও বাকিরা ডুবে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে নামেন। এ সময় নদী থেকে আরো ১০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ ৬ জনের কোনো সন্ধান মেলেনি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –