• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিএনপিতে ফের মহাসচিব পরিবর্তনের গুঞ্জন

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১  

সব মিলিয়ে ছয় দিন বিএনপি তাদের সাংগঠনিক অবস্থা এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে। দুই ভাগে বিভক্ত এ ধারাবাহিক বৈঠকে বিএনপির নেতারা খোলামেলা আলোচনা করেছেন। প্রতিটি বৈঠকের ব্যাপ্তি ছিল ছয় থেকে আট ঘণ্টা। এ ব্যাপক আলোচনায় কথা বলার জন্য তৃণমূলের নেতারাও পেয়েছেন সুযোগ।

আর এসব কথাবার্তায় দলের আন্দোলন নিয়ে যেমন হতাশার কথা এসেছে, তেমনি ভবিষ্যতের করণীয় নিয়েও অনেকে আলোচনা করেছেন। তবে বারবারই এসেছে দলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের প্রসঙ্গটি। বিশেষ করে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা, যারা বয়সের ভারে ন্যুব্জ, যারা অসুস্থ এবং নেতৃত্ব দিতে অক্ষম, তাদের পরিবর্তনের কথা বেশ জোরেশোরেই এসেছে আলোচনায়।

বিশেষ করে গত মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবারের আলোচনায় একজন যোগ্য মহাসচিবের প্রসঙ্গ বারবার এসেছে, যিনি দলকে অত্যন্ত সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির প্রয়াত নেতা খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের নাম যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে কেএম ওবায়দুর রহমানের নাম। এমনকি অনেকে ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের কথাও স্মরণ করেছেন। এসব বিবেচনায় বিএনপির মহাসচিব পদে পরিবর্তনের কথাও উচ্চারিত হয়েছে আকারে-ইঙ্গিতে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে দলে তার অবস্থান খুবই নড়বড়ে। একদিকে সিনিয়র নেতারা তাকে গ্রহণ করতে পারেননি, অন্যদিকে তৃণমূলের মধ্যে তিনি আস্থাশীল নেতা নন।

আর এ ধরনের বাস্তবতায় বিএনপিকে যদি নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে হয়, তাহলে একজন সার্বক্ষণিক সুস্থ এবং সাহসী মহাসচিব লাগবে বলে বিএনপির অনেক নেতাই মনে করছেন।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, ২০২৩ সালের মধ্যে যদি বিএনপিকে একটি বড় ধরনের আন্দোলন করতে হয় তাহলে মহাসচিব পদে পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই। বিএনপির মহাসচিব নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেই মহাসচিবের পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এক্ষেত্রে বেশকিছু নাম উচ্চারিত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারসাম্য রক্ষার জন্যই মহাসচিব পদে পরিবর্তন করা হয়নি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মন্দের ভালো হিসেবে এ পদেই রাখা হয়েছে।

তবে বিএনপি নেতারা মনে করেন, বিএনপি যদি এখন বড় ধরনের কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়, তাহলে মহাসচিব পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই। মহাসচিব কে হতে পারেন, এ নিয়ে বিএনপিতে নানামুখী আলোচনা আছে। আর সেই আলোচনায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

কারণ রুহুল কবির রিজভীর গ্রহণযোগ্যতা তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত। বিএনপির মধ্যে তিনি এখনো অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তি। তবে সমস্যা হলো রুহুল কবির রিজভীও অসুস্থ। তিনি কয়েক দফা হাসপাতালে ছিলেন। মানসিকভাবে দৃঢ় থাকলেও বিএনপির মতো একটি বড় দলের মহাসচিব হওয়ার জন্য রিজভী কতটুকু সুস্থ, সে নিয়ে খোদ দলের মধ্যেও প্রশ্ন রয়েছে।

এছাড়াও বিএনপির মহাসচিব পদে অন্যতম আলোচিত নাম মির্জা আব্বাস। তবে মির্জা আব্বাসেরও শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। এছাড়া সারাদেশে তার গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই কম। তিনি একজন বদমেজাজি নেতা হিসেবেও দলের মধ্যে সমালোচিত। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নিয়ে বিএনপিতে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। দলে তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে। কিন্তু বিএনপির মতো একটি সাম্প্রদায়িক দলের মহাসচিব হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কখনোই প্রথম পছন্দ নয়।

এছাড়াও বিএনপিতে আরো কিছু নেতা আছেন মহাসচিব হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে বিএনপির ওই ছয় দিনের বৈঠকের পর দল আসলে সংগঠন গোছানোর কৌশল কীভাবে নেবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়। এর মধ্যে মহাসচিব পদে আদৌ কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা, তাও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –