• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

আবারও রাজনীতিতে বিএনপির অশনি সংকেত

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩  

আবারও রাজনীতিতে বিএনপির অশনি সংকেত                               
যুগপৎ আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী (২৫ জানুয়ারি) দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপি। বিএনপির এসব কর্মসূচিকে দেশের রাজনীতির জন্যে আবারো অশনি সংকেত বলে অবিহিত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

ঐদিন দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয়ভাবে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে দলটি। বিষয়টি অবহিত করে সমাবেশের জন্য মাইক ব্যবহার ও সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর আবেদনও করা হয়েছে। 

বিএনপির প্রেসউইং সূত্র সংবাদমাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে, রোববার (২২ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে ২৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী সমাবেশের কর্মসূচি সফল করতে চায় দলটি। ১০ দফা দাবিতে চলমান গণ-আন্দোলনকে বেগবান করতে দল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীসহ জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সূত্র মতে, গত ১৬ জানুয়ারি (সোমবার) চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড়ে সংঘর্ষে পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। ঐদিন বিএনপির অন্তত ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়। এদিন ট্রাফিক পুলিশের একটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয় বিএনপি সমর্থকরা। সড়কে যানবাহন ও দোকান ভাংচুর করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে। পরে এ ঘটনায় ২৫৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা হলে পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেফতার করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তারা সব সময়ই দেশবিরোধী কাজ করে। ক্ষমতার লোভে জ্বালাও-পোড়াও করে। মানুষ হত্যা করে। এটিই তাদের ইতিহাস। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে  ১০০ দিনে বিএনপি-জামায়াত ১৫৩ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল।

এ সময় বিএনপি-জামায়াতের পেট্রলবোমার তাণ্ডবে আহত হয় আরো ২ হাজার সাধারণ মানুষ। ৫ শতাধিক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছিলেন। এর প্রেক্ষিতে ৫ শতাধিকেরও বেশি বোমা হামলা করা হয়েছিল । সরকারি এবং অন্যান্য স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল  প্রায় ৫০টিরও অধিক। এসব ঘটনার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মিরাসানী রেলস্টেশনের টিনশেড অফিসকক্ষে আগুন দিয়ে সব নথিপত্র পুড়িয়ে দিয়েছিল  বিএনপি-জামায়াত চক্র।

এছাড়াও, গত ১০ ডিসেম্বর ঘিরে যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল, সেটি মূলত বিএনপি নেতা আমানুল্লাহ আমানের দেওয়া এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই। তিনি ঢাকায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পরে বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নির্দেশে।

তার সেই বক্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই সবার মধ্যে এক ধরনের উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছিল এই ভেবে যে, ১০ ডিসেম্বর কি তাহলে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে? কিন্তু তার সেই বক্তব্য শুধু বক্তব্যই হিসেবে থেকে গেছে। যদিও এমন পরিবর্তন ঘটানোর মতো যৌক্তিক কোনো কারণ ছিল বলেও দেশবাসী মনে করেনি।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে রাজউক ভবনের সামনের সড়কে একটি বাস এবং একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় বিএনপি-জামায়াত। এ বছরের ৯ জানুয়ারি রাজধানীর মগবাজার এলাকায় বিএনপি-জমায়াতের কর্মীদের নিক্ষিপ্ত পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান প্রাইভেটকারচালক আবুল কালাম।

এসব ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, এ ঘটনাগুলো হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত সংগঠিত করেছিল। এমন অহরহ ঘটনা রয়েছে। এতে কত শত সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, তা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতার দাবিতে যে নৈরাজ্য চালিয়েছে, তা দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। তাই বিএনপির কোনো সমাবেশ বা কর্মসূচি হলেই জনগণ ভয় পায়। বিএনপির কোনো সমাবেশ বা কর্মসূচি মানেই দেশের রাজনীতিতে অশনি সংকেত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরো বলেন, ২৫ জানুয়ারি বিএনপি ফের সমাবেশ করতে চায়। এ সমাবেশ কি শান্তিপূর্ণ হবে? এ সমাবেশ কি জনসাধারণের কথা বলবে? নাকি আবারো সেই আতঙ্ক, অশনি সংকেত? এখন দেখার বিষয় বিএনপি ২৫ জানুয়ারি কী করে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –