• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও গণঅভ্যুত্থান

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২২  

ছয় দফার গণজাগরণে ভীত হয়ে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। মূলত বঙ্গবন্ধুর অসম সাহসী নেতৃত্ব ও গগনচুম্বি জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে, তাকে জেলে ঢোকায় পাকিস্তানের সামরিক সরকার। কিন্তু জাতীয় মুক্তির যে বীজমন্ত্র তিনি রোপণ করেছিলেন, তা ততদিনে শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। তাই বঙ্গবন্ধুর শারীরিক অনুপুস্থিতি কখনোই তার আদর্শিক মতাদর্শ বিনির্মাণে বাধা হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু জেলে যাওয়ার পরও আন্দোলন চলতে থাকে। ছয় দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ওঠে পুরো জাতি।

এরকম এক পরিস্থিতিতে, ১৯৬৮ সালের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর নামে দায়ের করা হয় 'রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব এবং অন্যান্য' নামের একটি মামলা (আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা)। জেলে থাকা অবস্থাতেই, ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি, নতুন করে এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। অভিযোগে বলা হয়, 'শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্যরা পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন'। সোজা কথায় বলতে গেলে, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনার জন্য বাঙালি সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু যে ধারাবাহিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন, সেটাকেই অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জন ব্যক্তির নামে এই মামলা দায়ের করে সামরিক সরকার। এসময় দেশজুড়ে মানুষ স্লোগান দিতে থাকে 'জেলের তালা ভাঙবো, শেখ মুজিবকে আনবো।' বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে একাকার হয়ে যেতে থাকে বাঙালির মানসপটে।

পরবর্তীতে প্রবল জনরোষের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট ও স্বঘোষিত ফিল্ডমার্শাল আইয়ুব খান। সেদিনই কারাগার থেকে মুক্তি পান বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার বিমূর্ত প্রতীকে পরিণত হওয়া শেখ মুজিবুর রহমান। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল জনসভায় 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিতে ভূষিত করা হয় তাকে। একটি স্বাধীন-স্বতন্ত্র বঙ্গভূমি তথা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সেদিনই বঙ্গবন্ধুকে সর্বোচ্চ নেতা মেনে প্রকাশ্যে উল্লাস করে সাত কোটি বাঙালি। এই গণ-আন্দোলনের পথ ধরেই ১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ আইয়ুব খানের পতন হয় এবং ক্ষমতায় আসেন জেনারেল ইয়াহিয়া খান। অন্যদিকে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে একচ্ছত্র হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –