• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

টেক্সটাইল শিল্পে নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশ   

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

টেক্সটাইল শিল্পে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী ভারত। দেশটির অর্থনীতিতে টেক্সটাইল শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে কয়েক বছর ধরে ভারতে টেক্সটাইল ব্যবসা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালে দেশটির টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি কমে ৩ শতাংশ। ২০২০ সালে এর হার দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ও ভারত থেকে ক্রয়াদেশ বাতিল করে ক্রেতারা পাকিস্তানের দিকে ঝোঁকায় রেকর্ড গড়ছে দেশটির তৈরি পোশাক রপ্তানি। এক বছর আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

একই সময় বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের মতো সাশ্রয়ী দেশগুলো ব্যবসা করেছে আশাতীত। দেশীয় খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের চেয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের দাম বেশি হলেও ভারতে টেক্সটাইল শিল্পের প্রধান কাঁচামাল সুতার দাম প্রায় ২০ শতাংশ কম। একই সঙ্গে কম ডাইস কেমিক্যালের দামও। ফলে গ্যাস বা বিদুৎ বিল সমন্বয় করার পরও বাংলাদেশের চেয়ে তাদের খরচ কম হবে। তবে ভারত বা পাকিস্তানে বায়ার (বিদেশি ক্রেতা) ফিরে গেলেও বাংলাদেশের পণ্যের কোয়ালিটি ভালো। পোশাকশিল্পের সক্ষমতার ওপর বায়ারদের আস্থা অনেক বেশি। এ শক্তি কাজে লাগিয়ে আগামীতে পোশাকশিল্প বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দেবে দেশ— এমনটাই আশা দেশীয় শিল্প উদোক্তাদের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলছে, ভারতের টেক্সটাইল ব্যবসা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালে দেশটির টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি কমেছে ৩ শতাংশ। ২০২০ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বাড়তি খরচ ভারতের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বড় সমস্যা। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে বিদ্যুৎ খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। প্রধান আমদানিকারকদের সঙ্গে ভারতের মুক্ত অথবা অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তির অভাব রয়েছে। পোশাকের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও কাপড়ের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি না থাকা রপ্তানিকারকদের ওপর বাড়তি দামের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে ভারত। ভারতে উচ্চ মূলধন ব্যয় এবং প্রায় সব টেক্সটাইল যন্ত্রপাতির আমদানিনির্ভরতা সন্তোষকজনক মুনাফা অর্জনকে কঠিন করে তুলেছে। চীনা প্রস্তুতকারকদের তুলনায় উৎপাদনে বাড়তি সময় নেওয়া ভারত প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে।

পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনামূলক কাছাকাছি উৎপাদনকেন্দ্রে বিনিয়োগের প্রবণতাও ভারতের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমদানিকারকদের সঙ্গে মুক্ত অথবা অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তি করা, সেবা খাতগুলোর সংস্কার, ডিজিটালাইজেশন, সক্ষমতা বাড়ানো ও স্থায়ী বিনিয়োগ। টেক্সটাইল শিল্পে আগামী পাঁচ বছরে ভারতের পারফরম্যান্স-পরবর্তী বহু বছরের গতি নির্ধারণ করতে পারে। বিশ্ববাজারে অবস্থান ও লাখ লাখ কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে থাকায় ভারতকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অথচ একই সময়ে বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের মতো সাশ্রয়ী দেশগুলো ব্যবসা করেছে আশাতীত।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভঙ্গুর প্রায় অর্থনীতিতে চাঙাভাব ফিরিয়ে আনছে পাকিস্তানের টেক্সটাইল শিল্প। মহামারিতে এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের আদেশ বাতিলের সুযোগে রপ্তানির রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশটি। রপ্তানি এক বছর আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়ে দেশটি রেকর্ড ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার প্রত্যাশা করছে। আগামী আর্থিক বছরে রপ্তানির এ চিত্র বেড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা করছে দেশটি। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারিতে ভারত এবং বাংলাদেশের কারখানা বন্ধ থাকলেও আগেই কারখানা খুলে দেয় পাকিস্তান। ফলে টার্গেট করপোরেশন ও হ্যানসব্র্যান্ডের মতো বৈশ্বিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ পায় পাকিস্তান। মনে করা হচ্ছে এতে দেশটির দুর্বল অর্থনীতি চাঙা করে তুলবে এ শিল্প।

অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি রপ্তানি তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়ানোর ধারা অব্যাহত রয়েছে দেশের।
 ইয়াসির আরাফাত রিপন
 

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –