• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

গাইবান্ধার বালুচরের বাহন ঘোড়ার গাড়ি

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২১  

এক সময় গাইবান্ধার রাজপথে বাহন হিসেবে চলছিল ঘোড়ার গাড়ির। সেটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে রাজপথ থেকে হারিয়ে গেলেও, এখনও গাইবান্ধার বিভিন্ন চরাঞ্চলে অহরহ দেখা যায় ঐতিহ্যবাহী এ গাড়ির।

জানা গেছে, গাইবান্ধার জেলার বুক চিরে বয়ে গেছে ঘাঘট, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, করতোয়া ও যমুনা নদী-নদী। সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও সদর উপজেলা বেষ্টিত এসব নদীতে জেগে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। এসব চরাঞ্চলে প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। তাদের বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা নিত্যপণ্য নিয়ে ছুটতে হয় নদীর ওপার-এপারে। তবে বর্ষাকালের যানবহন নৌকা হলেও শুষ্ক মৌসুমে এ পথ পাড়ি দিতে হয় ঘোড়ার গাড়িতে। ধূ ধূ বালুচরে এ গাড়িতে কৃষি ফসলসহ অন্যান্য মালামাল বহন করেন এলাকার বাসিন্দারা। এছাড়াও আত্নীয়-স্বজনের বাড়িতে যেতে যাত্রী সেজে ঘোড়ার গাড়িতে চলেন অন্যত্র। শুধু চরাঞ্চলবাসী নয়, অনেকে শখের বসে ঘোড়ার গাড়িতে ছুটে চলেন চরের বিভিন্ন এলাকায়।

এরেন্ডাবাড়ী চরের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব আলী বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আমাদের চলাচলের কোনও সমস্যা হয় না। নৌকাযোগে যেতে পারি গন্তব্যে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় নৌযান প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে ঘোড়ার গাড়িই ভরসা আমাদের।’

খাটিয়ামারী চরের বাসিন্দা সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের চরে মিষ্টি কুমড়া, মরিচ চাষ, ভুট্টা, মিষ্টি আলু ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয় এইসব ফসল নদীর ওপারে গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করতে হয়, যা বহন করতে ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র ভরসা। এছাড়া যানবাহন হিসেবেও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে চরবাসী।’

বালাসী ঘাটে আসা জান্নাতুল সুলতানা ও মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি দেখতে এখানে আসছিলাম। আর এ গাড়িতে বিভিন্ন বালুচর ঘুরলাম। অভিজ্ঞতা অনেক আনন্দায়ক ছিল।’

কামারজনি চরের ঘোড়ার গাড়ির মালিক জমির উদ্দিন জানান, শুকনো মৌসুমে প্রায় তিন মাস ঘোড়ার গাড়ি চালান তিনি। এতে দৈনন্দিন প্রায় ৩৫০-৪৫০ টাকা পর্যন্ত রোজগার হয়। এ দিয়েই সংসার চলে তার।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, ‘জেলার বিশেষ করে কামারজানি ঘাট, বাশাসী ঘাট ও ফুলছড়ি ঘাটে ঘোড়ার গাড়ি চোখে পড়ার মতো। এই ঘাট এলাকায় বীরদর্পে চলছে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি। এ যেন এক ঐতিহ্য বহন করে আসছে।’

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –