• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের নয়, বঙ্গবন্ধু এই জাতির: রাশেদ খান মেনন

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২০  

ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কেবল আওয়ামী লীগের নয়, বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নয়, বঙ্গবন্ধু জাতির, তিনি জাতির পিতা। তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ পরবর্তীকালে এই সংসদে দাঁড়িয়ে যখন সংবিধান আমাদের প্রদান করেন, যে চারটি মূলনীতি তিনি বলেছিলেন জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। আমরা দেখেছি সেটাকে ঝেটিয়ে বিদায় করা হয়েছিল জিয়াউর রহমানের আমলে এরশাদের আমলে। আমরা সেখান থেকে পঞ্চদশ সংশোধনীতে এটি পুনর্বহাল করি মূলনীতিতে। এই মুজিববর্ষে আমাদের ভাবার সময় আছে সেটা কি আমরা কেবল কাগজে রাখব নাকি বাস্তবে পরিণত করব।

গতকাল মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ওপর আনিত প্রস্তাব সাধারণের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন তার শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি হলেন তখন তার শেষ ভাষণে এই পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলেছিলেন এই বাংলাদেশে ধর্মের রাজনীতি আর হবে না, আর চলতে দেওয়া হবে না এবং তিনি বার বার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। আজকে মুজিববর্ষে এটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক কারণ যখন আমরা দেখি ইউটিউবে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি তার ধর্মীয় করণ করা হচ্ছে, যখন আমরা দেখি হেফাজত থেকে বলা হচ্ছে তাদের শর্তে দেশ চালাতে হবে অথবা যখন দেখি যে নিজামী এই সংসদে ব্লাসফেমি আইনের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন সেই ব্লাসফেমি আইন নতুন করে প্রণয়নের দাবি উঠছে। তখন আজকের বিষয়গুলো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়।

মেনন বলেন, যদি আমরা সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাই। বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৪ এবং ১৯৭৫ সালের বক্তৃতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করব। সেই বক্তৃতায় তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুস্পষ্টভাবে কঠোর বক্তব্য রেখেছিলেন। হুঁশিয়ারি করেছিলেন। আজকে আমাদের দেশে দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নের ধারা প্রসার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন কোনো সন্দেহ নেই আজকে জিরো টলারেন্স কেবল নয় আমাদের সমাজে যদি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হয় তবে অবশ্যই দুর্নীতি বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমাদের ডেকে পাঠালেন। আমাদের বন্ধু ড. ফরাস উদ্দীন তার প্রাইভেট সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি আমাদের ডেকে পাঠালেন ফরাস বললেন শোন তোদের বাকশালে যোগ দেওয়ার জন্য বলবেন, তোরা রাজি হয়ে যা, আমি বললাম আমরা কি বলব সেটা আমরাই ভালো বুঝবো। আমরা গেলাম তার বাসার লাইব্রেরিতে আমাদের বসিয়ে তিনি আসলেন, এসে বললেন শোন সিরাতুল মুস্তাকিম জানিস, সিরাতুল মুস্তাকিম মানে শরিয়া পথ। শোন সমাজতন্ত্র এবার করবো বিয়ের প্রথম রাতে বিড়াল মারতে হয়, প্রথম রাতে বিড়াল মারে নাই, এবার বিড়াল মারতে হবে। সমাজতন্ত্র করব এবং পাকিস্তান থেকে পুলিশ তাড়িয়েছি ওরা মনে করেছে আমাকে পকেটে রাখবে, আমি পকেটে থাকা লোক না, আমি শেখ মুজিবুর রহমান, আমি লিডার, আমি নেতৃত্ব দেই। আমরা বিনম্রভাবে অপারগতা জানিয়েছিলাম... তিনি বলেছিলেন শোন তাহলে এখান থেকে বেরিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে যা, আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা কর। আমরা বলেছিলাম আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব না, আপনি যদি পারেন আপনি যদি মনে করেন জেলে নিয়ে যান, বঙ্গবন্ধু বললেন আমি তোদের জেলে নেব না, শোন এখান থেকে বেরিয়ে যা ‘ওয়েট এন্ড সি’ দেখ আমি কি করি। এই শব্দ আমার কানে এখনো ভাসে। আমরা দেখলাম তার সেই শক্তি ধ্বংস হয়ে গেল, তার ঘরের শত্রু খুনিদের সাথে হাত মিলিয়ে তাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করল। আজকে সেই ইতিহাস খুনিদের ইতিহাস নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখুন।

তিনি বলেন, সেই খুনিরা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেছিল আমরা সেটা সবাই জানি। অসমতা বেড়ে যাচ্ছে গরিব মানুষ আরও গরিব হয়ে গেল। এমনকি ভ্যাকসিন নিয়েও স্বার্থসিদ্ধি হল। যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে না দাঁড়াতে পারি মুজিববর্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে না।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –