• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

রকমেলন ও সাম্মাম চাষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর চমক

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ মে ২০২১  

কুড়িগ্রামের উলিপুরে সম্পূর্ণ অর্গানিক ও আধুনিক মালচিং পেপার পদ্ধতিতে উন্নতজাতের বিদেশি সাম্মাম ও রকমেলন/হানিমেলন চাষ করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। প্রথমবারের মতো ফলটি এ অঞ্চলে চাষ হওয়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গার মানুষ দেখতে আসছেন তার ক্ষেতে। এই শিক্ষার্থীর নাম ফারুক আহমেদ। তিনি ঢাকা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বিভাগের পড়াশুনা করেন। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে রকমেলন চাষ করা সম্ভব বলে মনে করেন এ শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, রকমেলন হল মাস্কমেলন গোত্রের একটি উচ্চমূল্যের বিদেশি ফল। ফলের উপরের ত্বক পাথর (রক) এর মত, তাই অস্ট্রেলিয়াতে রকমেলন নামে পরিচিত। আরবে একে সাম্মাম বলে। উর্দুতে খরবুজ বা খরবুজা, আমেরিকাতে ক্যান্টালোপ, এশিয়াতে মেলন নামে পরিচিত। সুইট-মেলন বা মিষ্টি বাংগিও বলেন অনেকে। পুষ্টিগুণে রকমেলন অনন্য। বিভিন্ন এন্টি-অক্সিডেন্ট সম্পন্ন এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং সি, যা উচ্চ রক্তচাপ, এজমা কমিয়ে দেয়। এতে উপস্থিত বেটা ক্যারোটিন ক্যান্সার রোধ করে। এ ছাড়া এটি খুব রসালো ফল, ৯০% পানি, যা হাইড্রেশন বজায় রাখে ও হজমে সহায়তা করে। চুল ও ত্বকের জন্যও এই ফল খুবই উপকারি। সাম্মাম ফলের বাইরের অংশ হলুদ, ভিতরের অংশ লাল, রকমেলনের বাহিরের অংশ সবুজ ভিতরের অংশ লাল হয়।

সরেজমিনে উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামের ফারুক আহমেদের রকমেলন ও সাম্মাম  প্রকল্পে গিয়ে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি গত দুবছর ধরে যারা শহরের ছাদ বাগান করেন তাদের কাছে অনলাইনে "বীজ বাজার" ফেইসবুক পেজের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি সকল ধরনের উন্নতমানের বীজ, সার, কিটনাশক বিক্রিসহ ছাদ বাগানিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসতেন। কিন্তু মহামারী করোনায় সব বন্ধ হলে গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। পরে এক প্রতিবেশির পতিত ১৫ শতক জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি উন্নত জাতের রকমেলন ও সাম্মাম চাষ শুরু করেন। উৎপাদনও হয়েছে বেশ। অল্প সময়ের মধ্যে উন্নত জাতের বিদেশি সাম্মাম ও রকমেলন এ অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ফারুক আহমেদ জানান, আমাদের কুড়িগ্রাম জেলা কৃষিতে অনেক পেছনে। এই এলাকার মানুষ এখনও ধান চাষে পড়ে আছে। ধান চাষের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে কম খরচে উচ্চ ফলনশীল বিদেশি রকমেলন ও সাম্মাম চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। এ এলাকার বেকার, শিক্ষিত যুবকরা যদি চাকরির আশায় না থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষি কাজ শুরু করে, তাহলে এক দিকে যেমন বেকারের সংখ্যা কমে যাবে, অন্যদিকে দেশ তথা আমাদের কুড়িগ্রাম অঞ্চল কৃষিতে এগিয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনাকালীন সময়ে সরকার কৃষকদের জন্য কৃষি  ঋণের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি চাইলে আমরা তাকে ঋণের জন্য সুপারিশ করা হবে। উচ্চমূল্যের বিদেশি রকমেলন ও সাম্মাম ফল খুবই লাভজনক। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই ফল চাষ করে অল্প সময়ের মধ্যে অনেকে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে কৃষি বাণিজ্যিকরণের বিকল্প নেই। বর্তমানে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক উদ্যোক্তা হিসেবে উচ্চমূল্যের ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ফারুক আহমেদের মতো এ অঞ্চলের বেকার যুবকরা উচ্চমূল্যের ফলন চাষে এগিয়ে আসলে আমরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করব। 

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –