• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত সবর্জন শ্রদ্ধেয় ভাষাসৈনিক পেয়ারা

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২১  

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ভালবাসার অশ্রুতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত হলেন উত্তরের সবর্জন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের  বীর সেনানী সংগঠক বিশিষ্ট রাজনীতিক মীর আনিসুল হক পেয়ারা (৮৫)। সোমবার দুপুরে তাঁকে রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। রোববার বিকেলে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুরের একটি হাসপাতালের ইন্তেকাল করেন।

সোমবার দুপুর ১২ টায় মাহিগঞ্জ শাহী মসজিদ প্রাঙ্গনে তাকে গার্ড অব অনার দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মামনা জানায় জেলা প্রশাসন।  পরে সেখানেই নামাজে জানাযা শেষে তাকে মাহিগঞ্জ কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। তার নামাজে জানাযা ও দাফনে অংশ নেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলসহ সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষ।

মীর আনিসুল হক পেয়ারার বড় মেয়ে ও রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইফফেতারা বিনতে আনিস লুবনা জানান, ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন তিনি। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতেই মুমূর্ষ অবস্থায় শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত বৃহস্পতিবার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার পৌনে ৬ টায়  তিনি মারা যান।

আনিসুল হকের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চার মেয়ে ও একজন ছেলে। তার স্ত্রী নূরজাহান বেগম ২০১৪ সালে মারা গেছেন। ছেলে-মেয়ে সবারই বিয়ে হয়েছে। এদের মধ্যে ইফফেতারা বিনতে আনিস লুবনা রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শামীম আরা সুলতানা রাজশাহীর চারঘাটে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ছোট মেয়ে শাহিনা সুলতানা রংপুর জিলা স্কুলের শিক্ষক ও ইসমত আরা বিনতে আনিস লুমা বেসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। আর ছেলে মীর ইফতেখারুল হক পল্লব ব্যবসা করছেন।

রংপুরের মাহিগঞ্জে ১৯৩৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জন্ম নিয়েছিলেন আনিসুল হক পেয়ারা। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ৫২’র পরে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। আত্মগোপনে চলে যান তিনি। পলাতক থাকায় ১৯৫৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে ১৯৫৫ সালে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ১৯৫৬ সালে আবারও আত্মগোপনে থাকেন তিনি।

১৯৬১ সালে মাহিগঞ্জ আফানউল্ল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনের সময় দুই মাস কারাবন্দি ছিলেন। একাত্তরে সরাসরি স্বাধীনতাযুদ্ধে নেন। তিনি রংপুরসহ উত্তরের বিভিন্ন পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি রংপুর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ছিলেন। ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা।

আনিসুল হক পেয়ারার মৃত্যুতে রংপুরের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাঙ্গণে শোকের ছায়া মেনে এসেছে।

তার মৃত্যুতে সিটি মেয়র, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভুঞা, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ, ডিআইজি দেবদাস ভট্রাচার্য, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবি, সামাজিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও  প্রতিষ্ঠান শোক  বার্তা দিয়েছেন।

শোক বার্তায় মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –