• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

শপথ নিয়েই অভুক্ত মুজিব ছুটলেন আদমজীতে দাঙ্গা থামাতে

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২০  

শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও অন্য নেতারা টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ কর্মী সম্মেলনে। বিশাল সমাবেশ। ভাসানী, মুজিবকে দেখিয়ে- এই তোমাদের নতুন নেতা। ইলেকশনে যুক্তফ্রন্টের বিপুল জয়ের পরও সে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েরা পড়ে রয়েছে গোপালগঞ্জের গ্রামে। সে মন্ত্রীত্ব চায় না। কিন্তু আমি ও সোহরাওয়ার্দি সাহেব সাফ বলে দিয়েছি শেরে বাংলাকে- ২১ দফা কার্যকর করতে হলে, মজলুম মানুষের ভাগ্য ফেরাতে হলে মজিবরের মতো লোক থাকতে হবে সরকারে।

এসডিও ভাসানীকে- স্যার, মুখ্যমন্ত্রী রেডিওগ্রাম পাঠিয়েছেন- শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবকে জরুরিভিত্তিতে ঢাকা যেতে হবে।

ভাসানী- কেন এমন জরুরি তলব? মজিবর, মনে হয় তোমাকে মন্ত্রিসভায় নিতে চাইছে। শেরে বাংলা এতদিনে ভুল বুঝতে পেরেছেন। কেন্দ্রের মুসলিম লীগ সরকার চক্রান্ত করছেন। সেটা রুখতে তোমাকে দরকার। তবে সোহরাওয়ার্দি সাহেবের সঙ্গে ফোনে পরামর্শ করে নিও।

----

ঢাকায় মুজিব, রজনী বসু লেনের বাসভবনে। পুলিশের গাড়ি প্রহরায় বাসভবনে এসে দরজায় টোকা দেন মুজিব। দরজা খুলে দেন বেগম মুজিব, এক বছরের জামাল কোলে।

মুজিব- তুমি?

হাসিনা ও কামাল দৌড়ে আসে- আব্বা!

মুজিব কোলে তুলে নেন জামালকে। কামাল ও হাসিনা দুই পাশে।

বেগম মুজিব- গতকাল এসেছি। কিছু সময় পর দেখি পুলিশ এসে হাজির। ভয় পেলাম, শেরে বাংলাও তোমাকে অ্যারেস্ট করবে না-কি? কিন্তু একজন অফিসার আমাকে স্যালুট দিলেন। তাজিমের সঙ্গে বললেন- স্যারকে মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা সালাম দিয়েছেন। আমি বলি- টাঙ্গাইল গেছেন। ওরা ওয়ারলেসে কার সঙ্গে কথা বলেন। শুনলাম- টাঙ্গাইল খবর পাঠাও।

হাসিনা- আব্বা, তোমার ঢাকার বাড়ি এত ছোট কেন? আমি ভাইদের সঙ্গে খেলা করতে পারি না।

বেগম মুজিব- বস, বিশ্রাম নিয়ে শেরে বাংলার কাছে যাও। কেন ডেকেছে, বুঝতে পারছ কিছু?

মুজিব- মনে হয় মন্ত্রী হতে অনুরোধ করবে।

বেগম মুজিব- দেখ, ক্ষমতার লোভ করবা না। যা করবা, নেতাদের সঙ্গে কথা বলে করবা।

হাসিনা- আব্বা, মন্ত্রী কী?

মুজিব- হাচু মা, মন্ত্রী মানে দুঃখী মানুষের জন্য কিছু করা। তোমার যে সব বন্ধু আছে, তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া। লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা। কাপড়ে দেওয়া। রোগ-ব্যারাম হলে ডাক্তার ডাকা, ওষুধ দেওয়া।

হাসিনা- মায়ের রান্না ঘরের বুয়ার আর কষ্ট থাকবে না, আব্বা?

বেগম মুজিব- মেয়ের কথাটা মনে রেখ।

মুজিব তিন ছেলেমেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। চোখের পানি মোছেন। বেগম মুজিব পাশে দাঁড়ানো।

মুজিব- আমার এতদিনের জীবন কেটেছে মোসাফিরের মতো। মন্ত্রী হব, না-কি আবার জেলে যেতে হবে- জানি না। দেখ, সংসার পাততে পার কী-না। ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

বেগম মুজিব- ঢাকায় এসেছি কেবল হাসিনা-কামালের পড়াশোনার জন্য। মেয়েটার সাত বছর হতে চলল। একটা ভাল স্কুলে ভর্তি করা দরকার। পড়াশোনায় খুব মন। কামালকেও পড়া দেখিয়ে দিতে পারে।

মুজিব- কিন্তু খরচ কীভাবে চলবে?

বেগম মুজিব- তুমি কী ভাবছ, তোমার ভরসায় আমি ঢাকা এসেছি? ধানপান বেঁচে যা টাকা পাওয়া যায়, তা থেকে আব্বা আমাকে কিছু দেন। সে সব জমিয়ে রাখি। সংসার চালাব আমি।

মুজিব, হাসিনাকে- মা- তোমাদের মা-ই আমার গার্জিয়ান। আমার কোনো চিন্তা নাই।

----

শেরে বাংলার বাসভবনে মুজিব। বাইরে পুলিশ। অনেক কর্মী। শেরে বাংলার সমর্থক কর্মী- লিডার শেষ পর্যন্ত মুজিবের কাছে হার মানলেন।

আরেক কর্মী- মুজিবের সাংগঠনিক ক্ষমতা মানতেই হবে। আমাদের কেএসপি দলে নেতা আছে, কর্মী নাই। আওয়ামী লীগের শহর-গ্রামে, ঘরে ঘরে কর্মী।

মুজিব ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। শেরে বাংলা উঠে জড়িয়ে ধরেন মুজিবকে। শেরে বাংলা- নাতি আমার, অভিমান করে থাকিস না। আমি তোকে চাই। না বলবি না। তোকে মন্ত্রী হতেই হবে।

মুজিব- নানা... কথা শোনেন।

শেরে বাংলা- এখন তোর কোন ওজর-আপত্তি শুনব না। কাকে কাকে মন্ত্রী করব, তুই সব ঠিক করে দে। মন্ত্রিসভা যেভাবে চালাতে চাস, সেভাবেই চলবে। নাতি, তুই হবি সর্বকনিষ্ঠ সদস্য, তবে সব চলবে তোর কথায়।

মুজিব- সোহরাওয়ার্দি ও ভাসানী সাহেবের সঙ্গে কথা বলে জানাব।

----

মুজিব হাটখোলার ইত্তেফাক অফিসে। মানিক মিয়া ও আতাউর রহমান একসঙ্গে- কী বললেন শেরে বাংলা?

মানিক মিয়া- আওয়ামী লীগকে মন্ত্রিসভায় নেবেন?

আতাউর রহমান- কাকে কাকে মন্ত্রী করবেন?

মুজিব- মুখে তো বলছেন- আমি যা ঠিক করব, সেভাবেই চলবে সব কিছু। কিন্তু তিনি তো ঘন ঘন মত বদলান। আমি বলেছি, আপনাদের সঙ্গে কথা বলে জানাব।

মানিক মিয়া- করাচিতে লিডারের সঙ্গে কথা বল। অপারেটর, করাচিতে সোহরাওয়ার্দি সাহেবকে ফোনে ধর।

মুজিব- ইত্তেফাক দৈনিক হওয়ায় এই সুবিধাটা পাওয়া গেল। হ্যালো স্যার- আসসালামু আলাইকুম। একটা আগে শেরে বাংলা ডেকেছিলেন। আওয়ামী লীগের তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রিসভা সম্প্রসারনে রাজী। আমরা কী করব? ভাসানী সাহেব জয়েন করতে বলছেন। আপনার শরীর ভাল না? সোলায়মান সাহেবের সঙ্গে কথা বলব? ভাইজান, লিডার কী বলছেন- আমরা জয়েন করব?

মুজিব অন্যদের- লিডারের শরীর খুব খারাপ। তার জামাতা সোলায়মান সাহেব বললেন- লিডারের আপত্তি নাই।

আতাউর রহমান- আপনি শেরে বাংলাকে আমাদের সম্মতি জানিয়ে দেন।

মুজিব- আমি ভাসানী সাহেবের সঙ্গে কথা বলে নিতে চাই। তিনি দলের সভাপতি। আজ রাতেই টাঙ্গাইল যাব।

আতাউর রহমান- তিনি তো মত দিয়েই আপনাকে শেরে বাংলার সঙ্গে কথা বলতে পাঠিয়েছেন? এত রাতে যাওয়ার কী দরকার?

মুজিব- মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার ফল তাকে জানাতে হবে। তাছাড়া কে কে মন্ত্রী হবেন, সে বিষয়েও তাঁর অনুমোদন নেওয়া উচিত।

আতাউর রহমান- আমি যাবার আগে বাসায় যেতে চাই। মজিবর সাহেবের তো এ সব ঝামেলা নাই। ঘর-সংসার যিনি সামলান, তিনি আপনার কোনো কাজেই না করেন না।

মানিক মিয়া- আতাউর রহমান সাহেব, মন্ত্রীর লিস্টে আপনার নাম আছে এক নম্বরে। ভাবি সাহেবার নিশ্চয়ই আপত্তি থাকবে না? মুজিবসহ নেতারা হেসে ওঠেন।

----

ভোরের সূর্য ওঠার সময় আতাউর রহমান, মুজিবসহ দুটি জিপ টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে দাঁড়ায়। মওলানা ভাসানী তাদের স্বাগত জানান।

ভাসানী- আমি জানতাম, মজিবর রাতেই রওনা দেবে। ফজরের নামাজের পর থেকেই পথের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তোমাদের নাস্তা রেডি করে রেখেছি।

আতাউর রহমান- পথে খুব কষ্ট হয়েছে হুজুর। রাস্তা খারাপ। ৬ ঘণ্টার বেশি লেগেছে।

ভাসানী- এখন মন্ত্রী হবা, রাস্তা ঠিকঠাক করে নিও। আমি তো সম্মতি আগেই দিয়েছি। তবে, মজিবর কিছু করার আগে কথা বলে সবার সঙ্গে। তোমাদের মতো তাড়াহুড়া করে না। সোহরাওয়ার্দি সাহেবের অনুমোদন নিশ্চয়ই রয়েছে?

মুজিব- আমরা মানিক ভাইয়ের অফিসের ফোন দিয়ে করাচিতে লিডারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি রাজী হওয়ার পর আপনার কাছে এসেছি।

ভাসানী- আমি সাফ বলে দিচ্ছি, মজিবর, দরকার হলে তোমাকে মন্ত্রীপদ নিতে হবে, আবার যখন বলব- মন্ত্রী পদে লাথি মারতে হবে, পদ ছাড়তে হবে। দলের অন্য কাউকে বলে লাভ নাই। তাদের কাছে মন্ত্রী পদ অনেক বড়। এখন শেরে বাংলা অনেক জট পাকিয়েছেন। তুমি মন্ত্রিসভায় না থাকলে চলবে না।

----

১৫ মে, ১৯৫৪। লাটভবনে মন্ত্রীদের শপথ। শেরে বাংলা- মুজিব, তুমিই বাংলার ভবিষ্যৎ। তোমাকে ছাড়া আমরা ঠিকভাবে কাজ করতে পারছিলাম না। তবে বুঝতেই পার, আমাকে কতজনের কথা শুনে চলতে হয়। তাই ইলেকশনে জয়ের প্রায় দুই মাস পর তুমি মন্ত্রী হলে।

মুজিব- আপনি আমাদের নেতা। আপনার নির্দেশনা আমরা মেনে চলব।

আতাউর রহমান- স্যার, তাড়াতাড়ি দফতর বণ্টন করে ফেলেন। অনেক কাজ জমা পড়ে আছে।

পুলিশ অফিসার শেরে বাংলাকে- স্যার, আদমজী জুটমিলে ভয়াবহ দাঙ্গার খবর এসেছে। বাঙালি ও অবাঙালি শ্রমিকরা পরস্পরকে মারছে। শত শত নিহত ও জখম বলে গুজব।

মুজিব- আজ আমাদের শপথের দিনেই এমন অশুভ লক্ষণ! স্যার, আমাদের এখনই আদমজী যেতে হবে।

শেরে বাংলা- ইপিআর ফোর্স ও পুলিশ মোতায়েন কর। চল, নাতি- দিনটা শেষ পর্যন্ত ভাল গেল না। তুমি না গেলে সেখানে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না।

আদমজীতে মুজিব। পুলিশ অফিসার- স্যার, মিলের ভেতরে আপনি যেতে পারবেন না। সব খানে লাশ আর লাশ। এখনও খুন-খারাবি চলছে। আমাদের পুলিশ ফোর্স নাই।

মুজিব- শেখ মুজিবের পুলিশ সিকিউরিটি লাগে না। শ্রমিক ভাইয়েরা মরছে। আমি সিকিউরিটি নিয়ে বসে থাকব?

মুজিব এগিয়ে চলেন। আশাপাশ থেকে কিছু মানুষ যোগ দিয়েছে। কয়েকজন পুলিশ এসেছে। মুজিব- পুলিশকে, ঢাকায় ওয়ারলেস করেন, ফোন করেন- যত পারে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে বলেন। নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার সব হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের হাজির থাকতে বলেন। আওয়ামী লীগ নেতাদেরও খবর দেন।

মুজিব আহতদের নিজে পানি দিচ্ছেন। অন্যরাও আহতদের ব্যান্ডেজ করতে শুরু করল। এক মিল অফিসার মুজিবকে- স্যার, আপনি এখন সব দায়িত্ব বুঝে নেন। এতক্ষণ কেউ আমাদের কাজে লাগায়নি। সবাই অসহায় হয়ে পড়েছিলাম।

মুজিব- ওখানে এত লোক কী করছে?

এক পুলিশ অফিসার- ওরা আশপাশের গ্রাম থেকে এসেছে। মিলে হামলা করতে চাইছে।

ভিড়ের মধ্যে গিয়ে মুজিব- আমি শেখ মুজিব বলছি। কেউ মিলে মিলে হামলা করার আগে আমাকে আঘাত করুন। আমি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে সোজা এই হানাহানি থামাতে চলে এসেছি। এই হানাহানি যুক্তফ্রন্ট সরকারকে হেয় করার জন্য। এই সরকার আপনাদের অনেক ত্যাগের ফসল।

ক্ষুদ্ধ জনতার একজন- বাঙালিদের মেরে ফেলছে বিহারিরা। এটা মানব না।

অন্যরা- বাঙালি হত্যার বদলা নেব।

মুজিব- বিচার করার জন্য পুলিশ আছে, জজ-ম্যাজিস্ট্রেট আছে। আপনারা আহতদের চিকিৎসায় সাহায্য করুন। আর যারা মারা গেছেন, তাদের দাফনের ব্যবস্থা আমরা করছি। জুটমিলে ইপিআর ছিল। তারা কেন দাঙ্গাকারীদের প্রতি গুলি করল না, সেটা সরকার দেখবে।

----

রাতে শেরে বাংলার বাসভবনে মুজিব।

শেরে বাংলা উদ্বিগ্ন, পায়চারি করছেন। শেরে বাংলা- মুজিবকে কেন দাঙ্গাবাজাদের মধ্যে সিকিউরিটি ছাড়া যেতে দিলে? তাকে যদি মেরে ফেলত?

পুলিশ অফিসার- স্যার, উনি কিছুতেই আমাদের কথা শুনলেন না। তবে স্যার, এমন সাহসী মানুষ জীবনে দেখি নাই। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেন।

শেরে বাংলা- মুজিব কার নাতি, দেখতে হবে না। সে সাহসী হবে না তো কে হবে? দেখ, মুজিব এখন কোথায়?

পুলিশ অফিসার- স্যার, ওই তো উনি এসে পড়েছেন।

মুজিব এগিয়ে যায়। সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবির নানা স্থানে রক্ত। চেহারা উষ্কখুস্ক।

শেরে বাংলা জড়িয়ে ধরেন তাকে- নাতি আমার, এই বোকারা তোমাকে দাঙ্গা এরিয়ায় রেখে চলে এসেছে। আমি মিলিটারি নামাতে বলেছি। মন্ত্রীদের ডেকেছি। সভা হবে। দেখ, কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পার।

----

মুজিব, আবুল মনসুর আহমদ আতাউর রহমান ও অন্যরা লাটভবনের বাইরে আসেন। অনেক লোক। রাত একটা। এক আওয়ামী লীগ নেতা এগিয়ে আসেন- মুজিব ভাই, খুব খারাপ খবর। আদমজীতে শত শত বাঙালিকে মেরে ফেলা হয়েছে, এ খবর রটেছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। বাঙালিরা অনেকে খেপে আছে। তারা বিাহারি ও অবাঙালিদের ওপর হামলা চালাতে চাইছে। মুজিব পুলিশকে- অবাঙালি যে সব এলাকায় বেশি, সেখানে খবর দেন। আমি সব খানে যাব। 

এক পুলিশ- এত রাতে যাবেন স্যার? আপনার বাসায় চিন্তা করবে না?

মুজিব- মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজ আগে। বাঙালি-অবাঙালি, কাউকেই আমরা হামলার শিকার হতে দিতে পারি না।

----

রজনী বসু রোডের মসজিদে ফজরের আযান দিতে দাঁড়ানো মোয়াজ্জিন। মুজিব তার পাশ দিয়ে গাড়িতে নামলেন নিজের বাসার গেটে। বেগম মুজিব দরজা খুললেন- এ কী চেহারা হয়েছে তোমার? তোমার শরীরে এত রক্ত কেন? আঘাত পাওনি তো? হাসিনা ও কামাল মালা নিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত বসেছিল। তুমি যাও, গোসল করে এস।

মুজিব- সব পরে শুনবা। মনে হয়, সব অর্জন শেষ করে দিতে গভীর ষড়যন্ত্র সফল হতে চলেছে। বুুঝতে পারি, তোমারও খাওয়া হয় নাই। আমিও সারা দিন-রাত কিছু খাই নাই।

খাওয়ার টেবিলে মুজিব, বেগম মুজিবসহ আরও দু’জন। মুজিব বেগম মুজিবকে- ডাল, ভাত, তরকারি যা আছে চার জনে ভাগ করে খেয়ে নিই। ওদেরও খাওয়া হয় নাই।

বেগম মুজিব- তোমরা তিনজনে খেয়ে নাও। সকাল হয়ে গেছে। আমি মুড়ি খেয়ে নেব।

মুজিব- বুঝলা রেণু, এই আমার মন্ত্রীত্ব জীবনের শুরু!

লেখক-অজয় দাশগুপ্ত

সূত্র : বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –