• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সর্বশেষ:
আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৪ ঘণ্টায় র‍্যাবের অভিযানে গ্রেফতার ২৯০। মেট্রোরেল স্টেশনে হামলা: ছয়জন রিমান্ডে।

বিড়ি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, জানেন না ৫৮% শ্রমিক

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৪  

আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বিড়ি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শ্রমিকরা। ফলে অধিকাংশ শ্রমিক বিড়ি কারখানায় কাজ ছেড়ে দিতে চান। ৫৩ শতাংশ শ্রমিক বলেন, তারা বিড়ি কারখানা ছাড়তে চান অনুন্নত জীবনমানের কারণে। ৬১ শতাংশ শ্রমিক মনে করেন বিড়ি কারখানায় কাজের অতিরিক্ত চাপ। ৫৮ শতাংশ শ্রমিক বিড়ি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে অবগত নন। আর কম মজুরিকে অসন্তোষের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন ৯৫ শতাংশ বিড়ি শ্রমিক। 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ড্রপ)’-এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩১ জেলার ১১৬টি বিড়ি ফ্যাক্টরিতে ২৫ হাজার ৮৬০ জন শ্রমিক কাজ করেন। তারা বছরে ৪ হাজার ৭০০ কোটি বিড়ি তৈরি করেন। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের বিড়ি শ্রমিকদের নিয়ে গবেষণা করে ডর্‌প। জেলার ঘারিন্দা ও সদর ইউনিয়নের বাররিয়া এবং সুরুজ গ্রামের ১০০ জনের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। রোববার এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে।

বিড়ি ফ্যাক্টরি শ্রমিক স্বপ্না খাতুন জানান, পরিবারের আর্থিক অনটনে সাত বছর বয়সে বিড়ি ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন তিনি। ১৯ বছর বয়সে এক রিকশাচালকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু সংসার টেকে মাত্র তিন বছর। সেই সংসার ছেড়ে ১৪ মাসের ছেলেকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন স্বপ্না। করেননি দ্বিতীয় বিয়ে। এখন দেওয়ান বিড়ি ফ্যাক্টরিতে সপ্তাহে তিন দিন কাজ করেন। মাসে আয় চার হাজার টাকা।

তিনি আরো বলেন, অনেক দিন বিড়ি তৈরির কাজ করলাম, কিন্তু আর্থিক সচ্ছলতা এলো না। অথচ এই কাজ করে পিঠে ব্যথা, কাশ ও চোখে কম দেখার মতো রোগ বাধিয়েছি। 

শুধু স্বপ্না খাতুনই নন, তার মতো অবস্থা বিড়ি শ্রমিক জাহানারা বেগম ও কুদ্দুস মিয়ার। তারা জানান, দীর্ঘদিন বিড়ি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে নানা অসুখে ভুগছেন তারা। 

গবেষণায় দেখা যায়, অধিকাংশ শ্রমিক বিড়ি কারখানায় কাজ ছেড়ে দিতে চান। ৫৩ শতাংশ শ্রমিক বলেন, তারা বিড়ি কারখানা ছাড়তে চান অনুন্নত জীবনমানের কারণে। ৬১ শতাংশ শ্রমিক মনে করেন বিড়ি কারখানায় কাজের অতিরিক্ত চাপ। স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা জানান ৬২ শতাংশ শ্রমিক। আর কম মজুরিকে অসন্তোষের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন ৯৫ শতাংশ বিড়ি শ্রমিক। 

গবেষণায় আরো দেখা যায়, ৫৮ শতাংশ শ্রমিক বিড়ি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে অবগত নন। গবেষণায় অংশ নেয়া ৮৫ শতাংশ শ্রমিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই পেশায় যুক্ত করতে চান না কোনো শ্রমিকই।

গবেষণায় বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়, এরমধ্যে রয়েছে– বিড়ি শ্রমিকদের জন্য সরকারি পদক্ষেপ, শিশুশ্রম রোধে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ, বিড়ি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানে বিশেষ প্রকল্প চালু করা ইত্যাদি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –