• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

যে মসজিদে নামাজ পড়েন বাংলাদেশ-ভারতের মানুষ

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২১  

বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের বাঁশজানি গ্রাম। যুগ যুগ ধরে কোনো সমস্যা ছাড়াই একসঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছে দুই গ্রামের মানুষ। দুই দেশের সম্প্রীতির অটুট বন্ধনের প্রতীক হিসেবে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি।

জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলেও ভাগ হয়নি সীমান্ত ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এ মসজিদটি। দুই দেশের পাশাপাশি দুই গ্রামের মানুষকে একই সমাজে আবদ্ধ রেখেছে ৭৩ বছর ধরে। দেশ বিভাগের বহু আগে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। দেশ ভাগের পর সীমান্তের শূন্যরেখা ঘেঁষে  বাংলাদেশর অভ্যন্তরে পড়ে যায়। মসজিদটি কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে।

মসজিদের ইমাম বাঁশজানি গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের দুই গ্রামের মুসল্লিরা আসেন মসজিদে। একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। তখন সবাই ভুলে যান যে- তারা দুটি দেশের নাগরিক। মসজিদ থেকে বের হয়ে কোলাকুলি করেন। নিজেদের মধ্যে কুশল বিনিময় করেন। মিলাদ হয়, শিরনি বিতরণ করা হয়। সেই শিরনি একসাথে বসে খান তারা। শুধু তাই নয়, অসুখে-বিসুখে, বিপদে-আপদে পরস্পরের কাছে ছুটে আসেন দুই দেশের দুই গ্রামের মানুষ।

বাঁশজানি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মসজিদটির অবকাঠামো ভাঙ্গাচোড়া হলেও এটি আমাদের গর্ব। দুই দেশের অনেক মানুষ মসজিদটি দেখতে আসেন। নামাজ আদায় করেন। আমাদের খুব ভালো লাগে।

ভারতের ঝাকুয়াটারী গ্রামের খয়বর আলী বলেন, মসজিদটির অনেক পুরোনো। দুই গ্রামের মানুষের আর্থিক সহায়তায় অস্থায়ীভাবে সংস্কার কাজ করা হয়। গ্রামের মাঝ বরাবর একটি কাঁচা সড়ক আছে। সড়কটি অর্ধেক বাংলাদেশ ও বাকী অর্ধেক ভারত সীমান্তে। সড়কটি আমরা সবাই ব্যবহার করি। দুই দেশের দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে কখনো ঝগড়া হয়েছে বলে শুনিনি।

মসজিদ কমিটির সম্পাদক ও বাঁশজানি গ্রামের বাসিন্দা কফিলুর রহমান জানান, সীমান্ত আইন অনুযায়ী জিরো পয়েন্টের দুইপাশে ১৫০ গজ করে নো-ম্যানস ল্যান্ড রয়েছে। মসজিদটি নো-ম্যানস ল্যান্ডে হওয়ায় সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

পাথরডুবি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মিঠু বলেন, সীমান্তবর্তী দুটি গ্রামের মানুষ পরস্পরের আত্মীয়। তারা শান্তিপূর্ণভাবে মসজিদে নামাজ আদায় করেন। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরাও কখনো বাধা দেননি।

ভূরুঙ্গামারীর ইউএনও দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন, আমি মসজিদটি দেখেছি। এটির উন্নয়ন-সংস্কারে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করব।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –