• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বয়স্কভাতা কার্ড পেলেন কুড়িগ্রামের সেই কবিজন নেসা

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২০  

অবশেষে বয়স্কভাতা কার্ড পেলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের বৃদ্ধা কবিজন নেসা (৭২)। সোমবার দুপুরে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের নিজেই কবিজন নেসার হাতে বয়স্ক ভাতা কার্ড তুলে দেন। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমান, ফিল্ড অফিসার আলমগীর হোসেন, হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন প্রমুখ। 

তাদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু। তিনি জানান, সমাজে পিছিয়ে পরা দুস্থ মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সরকারের লোকজন এসব মানুষের পাশে দাঁড়ালে এ জেলার চিত্র পাল্টে যাবে। 

উল্লেখ্য, ৪৯ বছর আগে স্বামী নটকু শেখকে হারানো বৃদ্ধা কবিজন নেসা অনেক কষ্টে নাবালক ৩ সন্তানকে মানুষ করছেন। বিয়েও দিয়েছেন দুই সন্তানের। আগে শারীরিক শ্রম দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করলেও এখন বয়স হয়েছে তার। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগব্যাধি। ঠিকমতো চলতে ফিরতে পারেন না। লাঠির উপর ভর করে চলে তার জীবন চাকা। সন্তানদের সংসারে হিমসীম অবস্থা। নিজেরাই চলতে পারে না, মাকে কিভাবে সহযোগিতা করবে। এমন পরিস্থিতিতে চলছিল তার দিনকাল। একটি সরকারি ভাতা কার্ডের খুব প্রয়োজন ছিল তার। কিন্তু কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় এক প্রকার অর্ধাহারে কাটছিল তার দিন। পত্র-পত্রিকায় তার কথা জানতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ মতিন (কুড়িগ্রাম-৩ আসন) তার প্রতিনিধিদের পাঠান খাদ্য সামগ্রি দিয়ে বৃদ্ধা মহিলাটিকে সহায়তা করার জন্য। 

এছাড়াও একটি ভাতা কার্ড করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। কিন্তু উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমান হালনাগাদ যে তালিকা করেন তাতে বাদ যান কবিজন নেসা। ফলে তার দুঃখ ঘোচার কোন পথ থাকল না। এনিয়ে রোববার কবিজন নেসাকে নিয়ে পত্র পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ হয়, ‘‘এমপি’রও সুপারিশেও কাজ হল না। কুড়িগ্রামে বিধবা কবিজন নেসার দরকার সামাজিক বেষ্টনির আর্থিক সহায়তা।’’ খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই কবিজন নেসার বাড়িতে যান তাকে একটি বয়স্ক ভাতা কার্ড তুলে দেয়ার জন্য।

বয়স্কভাতা কার্ড পেয়ে কবিজন নেসা প্রধানমন্ত্রীসহ স্থানীয় প্রশাসনের প্রশংসা করে বলেন- এই একটা কার্ড এর খুব প্রয়োজন ছিলো আমার। বয়স হওয়ার কারণে আগের মতো কাজ করতে পারিনা। অনাহারে অর্ধাহারে দিনানিপাত করতে হচ্ছিল। আওয়ামীলীগ সরকার প্রমান করল তারা দঃস্থদের  পাশে সবসময় রয়েছেন। শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, সেই সাথে উপজেলা প্রশাসককেও ধন্যবাদ জানান কবিজন নেসা। 

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের জানান, আমি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম’র এর নির্দেশে বৃদ্ধা মা’টির বাড়িতে গিয়ে তার হাতে কার্ড তুলে দিতে পেরে খুবই খুশি হয়েছি। কারণ তিনি আমার হাত ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও আনন্দানুভূতি প্রকাশ করছিলেন। আমি বলেছি, এটা আপনার কার্ড। আপনার প্রাপ্য। এতে আমাদের কোন গৌরব নেই। আমরা আপনাদের সেবা দেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছি। সরকার এজন্যই আমাদের রেখেছেন।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –