• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ স্বেচ্ছায় ছিল না: হানিফ

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২২  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, মেজর জিয়া নিজের ইচ্ছায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেননি। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। অথচ বিএনপি নেতারা দাবি করেন জিয়াউর রহমানই নাকি স্বাধীনতার ঘোষক। এসব মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়।

এ ছাড়া ৭১ এর ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতা কায়কোবাদ ও বেলাল আহমেদও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন। কিন্তু এরপরও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ বিএনপির মিথ্যাচার চলছেই।

শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধে মেজর জিয়া ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টার পরে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ চিন্তা করেছিলেন- যদি বাঙালি কোনো সেনা কর্মকর্তা দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করানো যায়, তবে পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তারা স্বাধীনতার পক্ষে চাঙা হবেন। আর সে সময় চট্টগ্রাম থেকে কালুরঘাট হয়ে যাচ্ছিলেন মেজর জিয়া। আমার ধারণা, তিনি নিরাপদ দূরুত্বে যাচ্ছিলেন। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীন রাজ্যের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আগে থেকে তা রেকর্ড করা ছিল। কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এই হলো ইতিহাস। সেই সময়ে ৬৪ দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করছে বিএনপি।

তিনি আরো বলেন, বাঙালিদের শোষণ ও নির্যাতন বন্ধে পাকিস্তান শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর নামে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়ে বাঙালিদের পক্ষে আন্দোলনরত বঙ্গবন্ধুকে স্তব্দ করতে চেয়েছিল। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে জনগনের ম্যান্ডেট পেলেও ক্ষমতায় হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। তিনি বলেন, 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। ’

মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রি-বাষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। সম্মেলনের উদ্ধোধক ছিলেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম.রুহুল আমিন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. রোশন আলী মাস্টার। সঞ্চালনা করেন মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লা মিয়া রতন সিকদার।

সম্মেলন থেকে অশোভন আচরণ করে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ: 

এদিকে, মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন চলাকালিন সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।   সম্মেলনে নেতাদের বক্তব্য চলাকালে সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক লিটন আব্বাসী ও ভাওরখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাব মিয়াসহ কয়েকজন 'সাংবাদিক লাগবে না এখানে, তোমরা চলে যাও', বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে চলে আসেন।  

মেঘনা উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান রনি বলেন, সম্মেলনের আয়োজকরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকার জন্য দাওয়াতপত্র দেন। যার কারণে স্থানীয় সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে সেখানে যান। কিন্তু এক পর্যায়ে আকস্মিক কয়েকজন নেতাকর্মী উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের চলে যেতে বলেন এবং অপমান করেন। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলম বলেন, ঘটনার সময় আমি মঞ্চে ছিলাম। এই বিচার পরে হবে।  

আর সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল গাফফার বলেন, সাংবাদিকদের বের করা হয়নি। যারা মোবাইলফোনে ভিডিও করতেছিলেন তাদের বের করা হয়েছে।  

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –