শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব : লোকচক্ষুর আড়ালের মানুষ
প্রকাশিত: ৮ আগস্ট ২০২৩

শাওন মাহমুদ
‘আমার স্ত্রী যার ডাক নাম রেণু - আমাকে কয়েকটা খাতা কিনে জেলগেটে জমা দিয়ে গিয়েছিল। জেল কর্তৃপক্ষ যথারীতি পরীক্ষা করে খাতা কয়টা আমাকে দিয়েছেন। রেণু আরও একদিন জেলগেটে বসে আমাকে অনুরোধ করেছিল। তাই আজ লিখতে শুরু করলাম।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেলখানায় রাজবন্দি থাকা অবস্থায় এই রেণুর প্রেরণাতেই লিখতে শুরু করেছিলেন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থটি।
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ফজিলাতুননেছা। তার বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ আবুল কাশেম নাতনির নাম রাখেন ফজিলাতুননেছা। ফুলের মতো গায়ের রঙ বলে মা হোসনে আরা ডাকতেন রেণু বলে। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।
শৈশবে মা-বাবাকে হারানোর পর ফজিলাতুননেছা বেড়ে ওঠেন দাদা শেখ কাশেমের কাছে। সম্পর্কে তিনি জাতির পিতার আত্মীয় হতেন। খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয় রেণুর। শেখ বাড়ির বিশাল পরিবারের সাথেই তিনি বেড়ে ওঠেন।
ছেলেবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর মতাদর্শের পরিবেশে নিজস্ব স্বকীয়তায় প্রস্ফুটিত হতে থাকেন। সামাজিক, রাজনৈতিক, নারী পুরুষের সমতা এবং স্বাধীন নাগরিকের ধ্যান ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল তার মাঝে, জীবনসঙ্গীর বিশ্বাসের হাত ধরে।
শেখ ফজিলাতুননেছার পিতামহ শেখ মোহাম্মদ কাশেম এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতামহ শেখ আব্দুল হামিদ ছিলেন চাচাতো ভাই। পুরো পরিবারের আদর্শ খুব সহজ ও স্বাভাবিক উপায়েই রেণুর মাঝে বাহিত হয়েছিল স্বামী বঙ্গবন্ধুর স্নেহ এবং সান্নিধ্যে। আধুনিক মানসিকতায় প্রভাবিত হয়েছিলেন তিনি এবং এই আত্মবিশ্বাসই রেণুকে সমৃদ্ধ করে তুলেছিল।
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত এক নাগাড়ে দুই বছরের বেশি সময় বঙ্গবন্ধু জেলের বাইরে থাকতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে রেণু ঠিক সংসারের হাল ধরে ছেলেমেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করেছেন।
নারী ও পুরুষের সমঅধিকার কতটা সহজ-স্বাভাবিক তা জানতে হলে বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতার পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও আদর্শকে উপলব্ধি করতে হবে। সেই সময়ের একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতার স্ত্রী হিসেবে রেণু ঠিক তার নামের মতোই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার আদর্শ, মতামত, চিন্তা ভাবনার পরাগায়ন করে গেছেন। প্রস্ফুটিত করে গেছেন বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্র।
মহাত্মা গান্ধীর স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধী, জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী কমলা নেহেরু ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবীর সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবকে ‘বঙ্গমাতা’ অভিধায় ভূষিত করেন। তাদের মতো তরুণ নেতারা খুব কাছ থেকে বঙ্গমাতাকে দেখেছেন, জেনেছেন এবং বিশ্বাস রেখেছেন। সেই কারণেই তারা জানতেন রেণু হাল না ধরলে তাদের মতো অনেক নেতারাই দলছুট হয়ে যেতেন।
রেণু খুব চাপা স্বভাবের হলেও অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। পরিবার থেকে দল, সবার কাছে তিনি ছিলেন চালিকাশক্তি। বাল্যবিবাহ হওয়া রেণু বুঝতে শেখার সময় থেকেই স্বামীকে রাজপথ, আন্দোলন আর জেলখানায় দেখতে পেয়েছেন।
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত এক নাগাড়ে দুই বছরের বেশি সময় বঙ্গবন্ধু জেলের বাইরে থাকতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে রেণু ঠিক সংসারের হাল ধরে ছেলেমেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করেছেন। তাদের পড়ার খরচ, জামাকাপড় বা খাতা কলমের খরচ, প্রাত্যহিক সামগ্রীর খরচ ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থেকেছেন তিনি।
আর্থিক সহযোগিতা, মানসিক সাহস, মতাদর্শের তর্কে আওয়ামী লীগের জন্য সহজ ও সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। দলের সব ধরনের খবরাখবর বা আলোচনা নানা কৌশলে ঠিক পৌঁছে দিয়েছেন জেলখানায়, বঙ্গবন্ধুর কাছে। আবার তার যেকোনো পরামর্শ বা আদেশ দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছেও পৌঁছে দিতেন রেণু।
রেণুর মতো উচ্চমার্গের মানুষের জন্মই হয় লোকচক্ষুর আড়ালে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়ার জন্য। রেণু তার সারা জীবনের সময়টুকু দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে...
অনেকের প্রশ্ন জাগে মনে, রেণু এত সহজ করে কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছিলেন কেমন করে! সত্যি বলতে রেণু তার বাবার থেকে মাঝে মাঝে অর্থ ধার করতেন, খুব জটিল অবস্থায় নিজের গয়না বিক্রি করেও রেণু পথ চলেছেন।
বঙ্গবন্ধুর মামলার নথিপত্র সংরক্ষণ করা, মামলার খরচ জোগানোর জন্য নীরবে নিভৃতে রেণু নিজের মতো করে অর্থ জোগাড় করতেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। তিনি টের পেয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীন ভূমি হওয়ার জন্য শেখ মুজিবর রহমানকে প্রয়োজন।
তাই রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক, দল—এই প্রতিটি ক্ষেত্রে রেণু ছায়া হয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন, আজীবন। তিনি কখনো দলের নেত্রী হতে চাননি, তিনি জানতেন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে, তার নেতৃত্বে দেশের মানুষ প্রতিটি ক্ষেত্রে উচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবে আপন গতিতেই।
রেণুর মতো উচ্চমার্গের মানুষের জন্মই হয় লোকচক্ষুর আড়ালে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়ার জন্য। রেণু তার সারা জীবনের সময়টুকু দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে, সবার অলক্ষ্যে, নিভৃতে, নীরবে।
এবং শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু ও রেণুর ঔরসে জন্ম নেওয়া তাদের বড় কন্যাকেও আমরা উপহার পেয়েছি, আধুনিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পরিচালনা করবার জন্য। রেণুর পরাগায়ন বাহিত হোক প্রজন্ম হতে প্রজন্মে। শুভ জন্মদিন রেণু। ভালোবাসা অবিরাম।
লেখক: শহীদ আলতাফ মাহমুদের কন্যা।
– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –- উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো বিভাজন চলবে না: রাষ্ট্রপতি
- কুড়িগ্রামে গলায় ফাঁস নিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী
- কুড়িগ্রামে প্রতিবন্ধী ও দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
- ২ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
- ২৪ বছর পর ধরলা নদীতে নৌকা বাইচ দেখতে মানুষের ঢল
- ঘুরে আসুন দেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘরে
- ক্লাবের অনুশীলনে ফিরেছেন আন্তোনি
- পর্নোগ্রাফি ম্যাগাজিনে জাহ্নবীর ছবি, হুমড়ি খেয়ে দেখছে সবাই
- অজু করলে যেভাবে গুনাহ ঝরে যায়
- দেশে সব ধর্মের নাগরিকদের সমান অধিকার: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
- শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে পাহাড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে
- চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ১৫ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন আপসহীন নেত্রী
- বিভিন্ন দেশে আটক ভিক্ষুকদের ৯০ শতাংশই পাকিস্তানি
- পর্যটন শিল্পের বিকাশে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি
- ঢাকাসহ ১৫ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস
- ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য শেখ হাসিনার ভাগ্যের সঙ্গে জড়িত’
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙালির বিশ্ব জয়ের সারথি: ইন্দিরা
- অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধরে রাখতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
- ‘দেশকে পিছিয়ে দিতে অনেকেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিকে তাকিয়ে আছে’
- কুড়িগ্রামে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক
- বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানি করতে আগ্রহী মেক্সিকো
- মায়ের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করলেন সজিব ওয়াজেদ জয়
- প্রধানমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন মোদি
- আমাদের এখনই রোবট তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে: পলক
- লঘুচাপে বাড়বে বৃষ্টি, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
- শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বে প্রশংসিত: আইনমন্ত্রী
- সততা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন: প্রধানমন্ত্রী
- থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
- রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়াম
- বাংলাদেশ-ফ্রান্স সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হবে
- অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: কাদের
- আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আছি: কৃষিমন্ত্রী
- সৈয়দপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাফল্য, বাংলাদেশকে পুরস্কৃত করলো যুক্তরাজ্য
- আগস্টে দেশব্যাপী ১৬৬৭ অগ্নিকাণ্ড, ঢাকাতেই ১২৮টি
- রৌমারী ইউএনওর নম্বর ক্লোন করে চাঁদা দাবি
- প্রধান বিচারপতির শেষ বিচারিক কর্মদিবস আজ
- গরম কমবে আজই, কাল থেকে টানা ৩ দিন বৃষ্টির আভাস
- রাজারহাটে চলন্ত বাইক উল্টে গিয়ে প্রাণ গেল দু’জনের
- যেভাবে যোগাসনের জন্য উপযুক্ত অ্যাপ বাছাই করবেন
- কুড়িগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আ’লীগ প্যানেলের জয়
- ভূমিকম্প নিয়ে আগে কোনো সরকার কাজ করেনি: দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী
- ‘শেখ হাসিনা বাড়ি না দিলে সারা জীবন রাস্তায় থাকা লাগত’
- সৈয়দপুরে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব)`র ৩য় কাউন্সিল অধিবেশন
- শীঘ্রই সব মিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হবে
- শেখ হাসিনা মানবাধিকারের জন্য কাজ করছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল-সমাবেশ বন্ধে লিখিত আদেশ প্রকাশ
- হাসিনা-মোদি বৈঠকে উঠবে তিস্তা ইস্যু
- রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ায় এখনো বেঁচে আছে যে গাছ