• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

গরু ও ঘর পেতে যাচ্ছেন সেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফরিদ

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

মাত্র দুই বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চোখের দৃষ্টি হারান ফরিদ হোসেন। তারপর থেকে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে চলতেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আবছা আলো আর আন্দাজের ওপর ভর করেই জীবনের গণ্ডি পাড়ি দিয়ে চলছেন।

সংসারজীবনে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা তিনি। ছোটবেলা থেকেই শাক, আর কুমড়া বিক্রি করে আয়-রোজগার করতেন। স্ত্রী নাজমা বেগম কাজ করেন অন্যের বাসায়। আর বাড়িতে পালন করেন একটি গরু ও দুটি ছাগল। স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন অনেক বছর আগের তৈরি করা একটি মাটির ঘরে। আলাদা কোনো ঘর না থাকায় গরু, ছাগলের সঙ্গে স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করে আসছেন ফরিদ হোসেন।

ফাটল ধরা ও জরাজীর্ণ সেই মাটির ঘরটির অবস্থা বেশ নাজুক। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিতে ঘরের ভেতরে পানি পড়ে। অন্যদিকে এক চৌকিতে জায়গা হয় না সবার। আর রাতে গরু-ছাগলের মলমূত্রের গন্ধে ঘুমাতে পারেন না তারা। তাই রাতের বেলায় রাস্তায় পায়চারী বা চৌকির পাশে বসে রাত কাটাতে হতো ফরিদ হোসেনকে।  

ফরিদ হোসেন-এর এই দুরবস্থা নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল-এ ‘পরিবার নিয়ে গোয়াল ঘরে বাস করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফরিদ’ শিরোনামে ভিডিও চিত্রসহ খবর প্রকাশিত হয়। পরে তা নজরে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ হিউম্যান লাইফের। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ফরিদ হোসেনকে একটি বকনা গরু ও ঘর তৈরি করে দিচ্ছে সংগঠনটি।

ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান সংগঠনটির কো-অর্ডিনেটর রেজাউল করিম রানা। গরু ও ঘর একই দিনে তার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

গরুসহ ঘর পেতে যাওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ফরিদ হোসেন বলেন, আমি পরিবার, গরু, ছাগল নিয়ে এক রুমে রাত কাটাতাম। অনেক কষ্ট হতো আমার। কিন্তু আমি দেখতে পাই না। নিজের কষ্ট নিজের বুকেই জমা রাখতাম। পরে ঢাকা পোস্ট আমার ও পরিবারের ভিডিও সাক্ষাৎকার নেয়। তাদের সহযোগিতায় সেভ হিউম্যান লাইফ আমাকে ঘর করে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গরু লালনপালন করে আমাদের আরও আয় হবে। আজ আমি অনেক খুশি। হয়তো ঘর পেয়ে আমি আর আমার সন্তানেরা অনেক দিন পর ভালোভাবে ঘুমাতে পারব। যারা এ কাজে সহযোগিতা করেছেন, নিশ্চয় এর প্রতিদান আল্লাহ আপনাদের দিবেন।

সেভ হিউম্যান লাইফের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হেলাল বলেন, আমরা গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পোস্টে ফরিদ হোসেনকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখি। তিনি চোখে দেখতে পান না। চার সন্তান, স্ত্রী ও গরু-ছাগল নিয়ে একটি রুমে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সে জন্য সেভ হিউম্যান লাইফ তাকে একটি বকনা গরু ও ঘর দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা তার জন্য গরু কিনেছি এবং ঘর নিমার্ণের কাজ শুরু করেছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা উপহারটি তুলে দিতে পারব বলে আশা করছি।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –