• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার নয়টি মারাত্মক কুফল

অনলাইন ডেস্ক

কুড়িগ্রাম বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮  

চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারের কুফল সম্পর্কে ডাক্তাররা বারবার আমাদের সতর্ক করে থাকেন। কিন্তু আমাদের অজান্তেই অনেক `অ্যাডেড শ্যুগার` ঢুকে পড়ে আমাদের শরীরে, নানা ধরণের খাবারের মাধ্যমে। অনেকে আবার লোভ না সামলাতে পেরে বিয়ে বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে অনেক বেশি মিষ্টি খেয়ে ফেলেন। তবে অতিরিক্ত চিনি কিন্তু দেহের জন্য বেশ ক্ষতিকর। খাদ্যে চিনির পরিমাণ বেশি থাকার বেশ কিছু কুফল নিয়ে আলোচনা করবো আজ।

১। অতিরিক্ত ব্রণ গবেষকরা মুখের চামড়ায় অতিরিক্ত ব্রণ ওঠার কারণ হিসেবে খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাদ্য থাকাকে দায়ী করেছেন। গবেষণাতেও দেখা যায়, যাদের ত্বকে একেবারেই ব্রণ নেই, বা থাকলেও বেশ অল্প, তাদের তুলনায় যারা অতিরিক্ত ব্রণের অধিকারী, তাদের খাবারে চিনির পরিমাণ অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী পাওয়া যায়।

২। ভীষণ ক্লান্তি সকালের নাস্তা বা দুপুরের খাবারে যদি প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফাইবার ও ফ্যাট বাদ দিয়ে একগাদা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে ফেলেন কি হবে তখন? ক্লান্তি হঠাত চরমে পৌঁছুবে। একটু বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার জন্য প্রাণটা আঁকুপাঁকু করতে থাকবে! সাথে হতে পারে প্রচণ্ড মাথাব্যাথা। আপনার পুরো দিনটাই কাটবে ঘুম ঘুম চোখে, কাজে মন বসবে না কিছুতেই।

৩। দাঁতের কাজ সারা! চিনির মত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলে মুখে থাকা ব্যাক্টেরিয়াগুলো এক বিশেষ ধরণের এসিড তৈরি করে, যা লালারসের সাথে মিলে প্লাক তৈরি করে। এই প্লাক যদি সঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হয় তবে এগুলো দাঁতের গায়ে স্তূপ আকারে জমা হয় এবং দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে থাকে। আস্তে আস্তে দাঁতে সৃষ্টি হয় ক্যাভিটি বা গর্ত। একসময় নষ্ট হয়ে যায় পুরো দাঁতটিই।

৪। উচ্চ রক্তচাপ রক্তচাপ ১২০/৮০ হলে তাকে স্বাভাবিক বলে গণ্য করা হয়। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাদ্যের কারণে আপনার রক্তচাপের এই সীমা অতিক্রম করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যাডেড শ্যুগার উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। ফ্রুক্টোজ শ্যুগার আমাদের দেহে বিপাকীয় ত্রুটির সৃষ্টি করে কারডিও-ভাস্কুলার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে দেয়।

৫। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি রক্তে ভাসমান বিভিন্ন প্রকারের নিম্ন ঘনত্বের ফ্যাট আমাদের দেহের জন্য চরম ক্ষতিকর। রক্তে দুই ধরণের কোলেস্টেরল থাকতে পারেঃ এইচডিএল, যেগুলো শরীরের জন্য ভালো ও এলডিএল যেগুলো দেহের জন্য বেশ বিপজ্জনক। ধারণা করা হয়, অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার আমাদের দেহে এলডিএলের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দেয়।

৬। অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠা ব্যায়াম করতে গিয়ে যদি অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠেন , এর জন্য আপনার অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাদ্যাভাসই মূলত দায়ী। যদি খুব পরিশ্রম দিতে হয় এমন কোনো কাজের আগে মিষ্টি জিনিস ভরপেট খেয়ে যান, আপনার অবস্থা বারোটা বাজতে বাধ্য। চূড়ান্ত ক্লান্তিতে ভেঙ্গে আসতে চাইবে শরীর।

৭। পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমড়ে হচ্ছে না? গরমের মধ্যে পরিশ্রমের পর দুম করে একটা কোক কিনে ঢক ঢক করে খেয়ে ফেললেন? খুব চাঙ্গা লাগলো তাই না? শক্তিও ফিরে পেলেন। কিন্তু তার সাথে দেহে নিয়ে নিলেন অতিরিক্ত ওজন, সেটা ভেবেছেন? কোক , পেপসি, সেভেন আপের মতো কোমল পানীয় গুলো তে থাকে সাংঘাতিক পরিমাণে `অ্যাডেড শ্যুগার` , যা দেহে চর্বির স্তর রূপে জমা পড়ে বাড়িয়ে দেয় দেহের ওজন।

৮। বিষণ্ণতা বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে, উচ্চ চিনিযুক্ত খাবারের সাথে সংযোগ রয়েছে প্রবল ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতার। অতিরিক্ত চিনি রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শরীরজুড়ে বারে প্রদাহ। যা পরোক্ষভাবে বয়ে নিয়ে আসে মানসিক বিষণ্ণতা।

৯। পেট ভরছে না কিছুতেই? যেসব খাবারে শুধু চিনি ভর্তি, কিন্তু প্রোটিন, ফাইবার ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের বালাই নেই, সেসব খাবার কিন্তু ইচ্ছে হলেই অনেক অনেক খাওয়া যায়, পেট ভর্তি লাগে না কখনো। এভাবে আরও বেশি বেশি শ্যুগার আশ্রয় নেয় আমাদের রক্তে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –